যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসের দিনে হোয়াইট হাউসে জমকালো এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বাক্ষর করলেন তাঁর আলোচিত ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট’-এ। এই বিলটিকে তিনি আমেরিকার “মহানতা ফিরিয়ে আনার সাহসী পদক্ষেপ” হিসেবে আখ্যা দেন।
হোয়াইট হাউসের সাউথ লনে হাজারো দর্শকের উপস্থিতিতে আতশবাজি ও সামরিক বিমানের উড়ানের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ট্রাম্প বলেন, “এর চেয়ে ভালো জন্মদিনের উপহার আমেরিকার জন্য আর কিছু হতে পারে না।” স্বাক্ষরের সময় পাশে ছিলেন রিপাবলিকান দলের বহু আইনপ্রণেতা, যারা শেষ পর্যন্ত বিলের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হন।
আইনটিতে ট্রাম্পের ২০১৭ সালের ট্রিলিয়ন ডলারের করছাড়ের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাশাপাশি মেডিকেইড ও খাদ্য সহায়তা কর্মসূচিতে প্রায় ১.২ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজেট ছাঁটাই করা হয়েছে। এতে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে ব্যয়ও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের অদলীয় বিশ্লেষক সংস্থা জানিয়েছে, এই আইনের ফলে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যবিমা হারাতে পারে।
বৃহস্পতিবার কংগ্রেসে ২১৮–২১৪ ভোটে বিলটি পাস হয়। বেশ কিছু রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা শুরুতে দ্বিধাগ্রস্ত থাকলেও স্পিকার মাইক জনসনের নেতৃত্বে তারা শেষ পর্যন্ত সমর্থনে আসেন। ডেমোক্রেটরা একযোগে বিলটির বিপক্ষে ভোট দিলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকানদের কারণে তারা আটকে রাখতে ব্যর্থ হন। সিনেটে সমান ভোট হলে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স টাই–ব্রেকিং ভোট দিয়ে বিলটি পাস নিশ্চিত করেন।
রিপাবলিকানদের দাবি, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের পর ট্রাম্পের আগের করছাড়ের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে এবং বড় ধরনের কর বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি হবে। এই বিলের মাধ্যমে প্রায় ৪.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের করছাড় নিশ্চিত করা হয়েছে বলে তারা জানিয়েছে।
বিলটির পাস হওয়াকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর রাজনৈতিক জয়ের ধারাবাহিকতা বলেই দাবি করেছেন। এর আগেই সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে ট্রাম্পের নীতিমালার বিরুদ্ধে ফেডারেল বিচারকদের একক হস্তক্ষেপ সীমিত করেছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার মাধ্যমে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সাময়িক যুদ্ধবিরতিও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এই আইন নিয়ে যদিও দেশজুড়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তবুও ট্রাম্প বলছেন, “আমেরিকাকে আবার মহান করার লক্ষ্যে এটি একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।” এখন দেখার বিষয়, এই বিল বাস্তবায়নের পর এর সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব কেমন পড়ে দেশজুড়ে।