Sunday, July 6, 2025
Homeজাতীয়জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সামাজিক মাধ্যমে ছড়াচ্ছে এআই ভিডিও

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সামাজিক মাধ্যমে ছড়াচ্ছে এআই ভিডিও

গভীর বাস্তবতা সম্পন্ন ‘সফটফেইক’ ক্লিপে রাজনৈতিক বার্তা, উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা

২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রচারে এক নতুন ও চিন্তাজনক প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে অত্যন্ত বাস্তবধর্মী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-চালিত ভিডিও।

গত জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ফেসবুক ও টিকটকে এমন ডজনখানেক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে— বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সমর্থন জানাচ্ছেন। ভিডিওগুলোতে যারা কথা বলছেন তারা কেউই বাস্তব মানুষ নন। এগুলো তৈরি করা হয়েছে গুগলের ভিডিও জেনারেশন টুল Veo 3 ব্যবহার করে, যেখানে মুখ, কণ্ঠস্বর এবং পরিবেশ সবই কৃত্রিমভাবে নির্মিত। অধিকাংশ ভিডিওতে কোথাও উল্লেখ নেই যে এটি এআই দ্বারা তৈরি।

এক ভিডিওতে একজন নারী বলছেন, তিনি ন্যায় ও উন্নয়নের স্বার্থে ভোট দেবেন একটি নির্দিষ্ট দলকে। আরেকটি ভিডিওতে এক বৃদ্ধ রিকশাচালক শপথ নিচ্ছেন ভোট দেবেন “ন্যায়বিচার ও সমতার” পক্ষে। কিন্তু বাস্তবে এই মানুষগুলোর কেউই অস্তিত্ব রাখেন না।

গবেষণা সংস্থা Dismislab জানিয়েছে, ১৮ থেকে ২৮ জুনের মধ্যে ফেসবুকে এ ধরনের অন্তত ৭০টি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে, যার অনেকগুলোতেই মিলিয়নের বেশি ভিউ হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ভিডিওগুলো “সফটফেইক” নামে পরিচিত। মানব বুদ্ধিমত্তা প্রতিষ্ঠান Humane Intelligence-এর প্রধান ড. রুম্মান চৌধুরী বলেন, “সফটফেইক” ভিডিওগুলো সরাসরি মিথ্যা বা মানহানিকর না হলেও এগুলো বাস্তবের কাছাকাছি কিছু উপস্থাপন করে জনগণের মানসিকতা প্রভাবিত করে। আর এতেই বাড়ছে আশঙ্কা।

এআই-চালিত রাজনৈতিক প্রচারের এই প্রবণতা ভারত ও পাকিস্তানেও দেখা গেছে। বাংলাদেশে এখনো স্পষ্ট নীতিমালা না থাকায় এখানেও তা ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা।

যদিও মেটা ও টিকটক-এর মতো সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোতে এআই কনটেন্ট লেবেল করার নিয়ম রয়েছে, তবুও অধিকাংশ ভিডিওতে সে ধরনের কোনও লেবেল নেই বলে জানিয়েছে Dismislab।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের ডিজিটাল সাক্ষরতা ও সচেতনতার অভাব থাকায় সাধারণ মানুষ সহজেই এসব ভিডিওর প্রতারণায় পড়তে পারেন। এতে ভোটারদের মতামত প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে।

নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, ততই নীতিনির্ধারক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর প্রতি জোরালো আহ্বান জানানো হচ্ছে— যেন দ্রুত কার্যকর নীতিমালা তৈরি ও বাস্তবায়ন করা হয়। না হলে, প্রযুক্তির এই অপব্যবহার ভবিষ্যতে নির্বাচন ও গণতন্ত্রের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

RELATED NEWS

Latest News