Sunday, July 6, 2025
Homeআন্তর্জাতিকগাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া হামাসের, সমঝোতার আশায় যুক্তরাষ্ট্র

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া হামাসের, সমঝোতার আশায় যুক্তরাষ্ট্র

৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় প্রস্তুত হামাস, ট্রাম্প বলছেন ‘সুন্দর একটি চুক্তি চাই’

গাজায় প্রায় ২১ মাস ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসানে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া জানিয়েছে হামাস। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় তৈরি এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি।

হামাসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, “গাজায় আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে চলমান আগ্রাসন বন্ধে মধ্যস্থতাকারীদের সর্বশেষ প্রস্তাব নিয়ে হামাস অভ্যন্তরীণ আলোচনা সম্পন্ন করেছে। আমরা ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে তাদের কাছে আমাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দিয়েছি এবং আলোচনায় বসার জন্য প্রস্তুত আছি।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই প্রস্তাবকে ‘চূড়ান্ত’ হিসেবে উল্লেখ করে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, শিগগিরই পক্ষগুলো থেকে প্রতিক্রিয়া আসবে। তাঁর ভাষায়, “আমরা সুন্দর একটি বন্দিমুক্তির চুক্তি চাই।”

তবে চুক্তি বাস্তবায়নে কিছু জটিলতা এখনও রয়ে গেছে। হামাস-ঘনিষ্ঠ একটি সংগঠনের একজন নেতা জানিয়েছেন, মানবিক সহায়তা প্রবেশ, রাফা সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এখনও এই প্রস্তাব নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, দেশটির সরকার হামাসের প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করছে।

এদিকে, মিশরীয় এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, “হামাসের প্রতিক্রিয়ায় ইতিবাচক দিক রয়েছে, তবে কিছু দাবি এখনও সমাধানের অপেক্ষায় আছে।”

শুক্রবার গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। এর মধ্যে খান ইউনিস শহরের পাশে একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে রাত ২টার দিকে হামলায় ১৫ জন নিহত হন।

গাজায় গণকবরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বাসিন্দারা। ১৩ বছর বয়সী মেয়ার আল ফারর বলেন, “যুদ্ধবিরতি আগেই হওয়া উচিত ছিল। আমার ভাইটি বেঁচে থাকত। এক মুঠো ময়দা আনতে গিয়েই গলায় গুলি খায় সে।”

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসে তেল আবিবে মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করেন গাজায় আটক বন্দিদের স্বজনরা। তাঁরা একটি প্রতীকী ডিনার টেবিল স্থাপন করেন যেখানে ৫০টি খালি চেয়ারে বন্দিদের প্রতিনিধিত্ব করা হয়।

একজন বিক্ষোভকারী গিডিয়ন রোজেনবার্গ বলেন, “শুধু আপনি (ট্রাম্প) চুক্তি করতে পারবেন। আমরা একটি সুন্দর বন্দিমুক্তির চুক্তি চাই।”

চলমান আলোচনায় ২০ জন জীবিত বন্দির মধ্যে প্রথম দফায় ১০ জনকে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে। এছাড়া, যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের মরদেহও ফেরত দেওয়ার বিষয় রয়েছে।

গাজায় প্রায় দুই বছরের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

সমঝোতার আশায় আন্তর্জাতিক মহল তাকিয়ে আছে আসন্ন সপ্তাহের দিকে। ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর মধ্যে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে, যা হতে পারে এই সংঘাত নিরসনের গুরুত্বপূর্ণ মোড়।

RELATED NEWS

Latest News