গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর রাতভর চালানো বিমান হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি। নিহতদের মধ্যে রয়েছে নারী ও শিশু। এই ঘটনায় গাজার খান ইউনুস শহরে নতুন করে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
গাজার সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল-মুঘাইয়্যির বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসের উপকূলীয় এলাকায় বাস্তুচ্যুতদের তাঁবু লক্ষ্য করে চালানো তিনটি পৃথক হামলায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। একটি হামলায় এক শিশুসহ সাতজন নিহত হন। অপর দুই হামলায় মারা যান আরও আটজন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে।
তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এ প্রসঙ্গে এএফপিকে জানিয়েছে, নির্দিষ্ট স্থানাঙ্ক ছাড়া তারা পৃথক হামলা নিয়ে মন্তব্য করতে পারবে না। তবে সেনাবাহিনী জানায়, তারা হামাসের সামরিক ক্ষমতা ধ্বংসে কাজ করছে।
বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছিল ৭৩। যদিও তথ্য যাচাইয়ে গণমাধ্যমের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ এবং অনেক এলাকায় প্রবেশে জটিলতার কারণে এএফপি স্বাধীনভাবে হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করতে পারেনি।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বারবার বলেছেন, তারা হামাসকে ধ্বংস করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। যদিও হামাস জানিয়েছে, তারা মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে একটি নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছে।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ইসরায়েল হামাসের সঙ্গে ৬০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে গাজায় আটক বন্দিদের মুক্তির সম্ভাবনাও রয়েছে।
ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়ছে বাকি বন্দিদের দ্রুত ফেরত আনার জন্য।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের প্রতিশোধমূলক হামলার পর শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত গাজায় ৫৭ হাজার ১৩০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘ এই হিসাবকে নির্ভরযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করে থাকে।
দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধের এই ধারা এবং ক্রমবর্ধমান শিশু হতাহতের সংখ্যা বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে। মানবিক পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ নিচ্ছে, এবং যুদ্ধবিরতির দাবি আরও জোরালো হয়ে উঠছে আন্তর্জাতিক পরিসরে।