Saturday, July 5, 2025
Homeঅর্থ-বাণিজ্যবাংলাদেশে কার্ড লেনদেনে ব্যাপক বৃদ্ধি, পাঁচ বছরে ২২৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

বাংলাদেশে কার্ড লেনদেনে ব্যাপক বৃদ্ধি, পাঁচ বছরে ২২৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

ডেবিট, ক্রেডিট ও প্রিপেইড কার্ড ব্যবহারে পাঁচ বছরে ২২৮ শতাংশ লেনদেন বৃদ্ধি

বাংলাদেশে কার্ডভিত্তিক লেনদেন ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। এতে স্পষ্ট হচ্ছে, দেশ ধীরে ধীরে একটি ডিজিটাল ও নগদহীন আর্থিক ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে ডেবিট, ক্রেডিট ও প্রিপেইড কার্ড ইস্যু এবং এর মাধ্যমে লেনদেনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের মে মাসে যেখানে ডেবিট কার্ডের সংখ্যা ছিল ১.৯৪ কোটি, তা ২০২৫ সালের এপ্রিল নাগাদ দাঁড়িয়েছে ৪.১৫ কোটি। ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ৬৫ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২৫ লাখ এবং প্রিপেইড কার্ডে ১,২৮৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যা ৫.৫ লাখ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৬ লাখ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “গত পাঁচ বছরে দেশের আর্থিক খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে, যার বড় অংশজুড়ে রয়েছে কার্ড লেনদেনের প্রসার।” তিনি জানান, সরকারের নীতিগত পদক্ষেপ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রেগুলেটরি সংস্কারের কারণে এই সাফল্য এসেছে।

তিনি আরও জানান, ভিসা কার্ড এখনো দেশের ভিতরে ও বাইরে লেনদেনের জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি, জীবনমানের উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক লেনদেন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই প্রবণতা আরও বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে দেশের অভ্যন্তরে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কেনাকাটায় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেলেও ঈদ-উল-ফিতরের প্রভাবের কারণে এপ্রিল ২০২৫-এ তুলনামূলকভাবে লেনদেন কিছুটা কমে আসে।

অন্যদিকে, এপ্রিল ২০২৫-এ আন্তর্জাতিক লেনদেনে ২৯.৪৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, জুন থেকে অক্টোবর ২০২৪ পর্যন্ত সময়কালে বিদেশি নাগরিকদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ব্যয় হ্রাস পেলেও, তা নভেম্বরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে এবং ধাপে ধাপে বাড়তে থাকে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত।

২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে দেশের অভ্যন্তরে ক্রেডিট কার্ড ব্যয়ের প্রায় ৫০ শতাংশই হয়েছে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে।

দেশের বাইরে ডেবিট ও প্রিপেইড কার্ডের মাধ্যমে মোট ৩,১০৮ মিলিয়ন টাকা ও ৮৪৫ মিলিয়ন টাকার লেনদেন হয়েছে। ডেবিট কার্ডে সর্বাধিক ব্যয় হয়েছে নগদ উত্তোলন (২০.৭৮%), রিটেইল সার্ভিস (২০.৫৩%) এবং ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে (১৭.৮৫%)।

অন্যদিকে, প্রিপেইড কার্ডে সর্বোচ্চ ব্যয় হয়েছে সরকারি সেবা (২৪.৬৮%), নগদ উত্তোলন (১৮.৪৩%) এবং ব্যবসায়িক সেবায় (১৮.২৯%)।

বাংলাদেশি নাগরিকেরা যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি (১৪%) ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেছেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশিদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরাই সর্বোচ্চ (৪২%) ব্যয় করেছেন। ডেবিট কার্ডের ক্ষেত্রে বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছেন চীনে (২১%) এবং প্রিপেইড কার্ডে যুক্তরাজ্যে (২২%)।

ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তির এই অগ্রগতি দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

RELATED NEWS

Latest News