মণিপুর রাজ্য সরকার আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সব ত্রাণ শিবির বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে, যেখানে বর্তমানে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত (IDPs) ব্যক্তিরা অবস্থান করছেন। শুক্রবার ইম্ফলে মনিপুর স্টেট কমিশন ফর শিডিউলড ট্রাইবস-এর দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রধান সচিব প্রশান্ত কুমার সিং এই ঘোষণা দেন।
তিনি জানান, বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের জন্য তিন ধাপে কার্যক্রম শুরু করা হবে, যার প্রথম ধাপ জুলাই থেকে শুরু হবে। পরবর্তী ধাপগুলো অক্টোবর ও ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে।
২০২৩ সালে ইম্ফল ভ্যালির মেইতেই জনগোষ্ঠী এবং পার্বত্য অঞ্চলের কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিগত সহিংসতায় ২৬০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন, আহত হন ১,৫০০ জন এবং ৭০,০০০ এরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হন। সরকারের হিসাব অনুযায়ী, বাস্তুচ্যুতদের সংখ্যা ৬২ হাজার থেকে কমে ৫৭ হাজারে নেমে এসেছে, অনেক পরিবার ইতোমধ্যে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন।
যেসব পরিবার এখনো ফিরে যেতে পারেনি, তাদের জন্য নির্মিত হচ্ছে এক হাজার নতুন প্রিফ্যাব ঘর। সংঘর্ষে যাদের বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে এবং যারা ফিরে যেতে ইচ্ছুক, তাদের জন্য ₹১.৩ লাখ পুনর্গঠনের আর্থিক প্যাকেজ এবং ₹১.৭ লাখ পুনর্নির্মাণ সহায়তা দেয়া হবে।
প্রশান্ত কুমার সিং জানান, রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের যৌথ উদ্যোগে মণিপুরের প্রধান সড়কগুলো পুনরায় চালু এবং নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে কাজ চলছে। “এগিয়ে যাওয়ার এই গতিতে আমরা আশা করছি বড় বড় সড়কে নির্ভয়ে চলাচল আবার শুরু হবে,” বলেন তিনি।
নিরাপত্তা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সিং বলেন, “মাঠপর্যায়ে দৃশ্যমান উন্নতি হয়েছে। আমি দুই পক্ষের নাগরিক সমাজ সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি তারা যেন শান্ত থাকেন ও সহযোগিতা করেন। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটতেই পারে, তবে সার্বিক পরিস্থিতি উন্নতির পথে।”
প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাব্য সফর সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক নিশ্চয়তা নেই। তবে মণিপুরসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, সেগুলোর উদ্বোধন শিগগিরই হতে পারে।
সিং আরও জানান, গৌহাটির ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (UIDAI) থেকে একটি দল মণিপুরে আসবে। তারা বাচ্চাদের জন্য ‘বাল আধার’ এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য আধার নাম নিবন্ধনের কাজ তদারকি করবে।