দেশীয় সুতা ও কাপড় উৎপাদনকারী কারখানাগুলোকে বাঁচাতে কটন আমদানিতে আরোপিত ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি) অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। পাশাপাশি, চলতি কর কাঠামো সংশোধন করে ২০২৮ সাল পর্যন্ত ১৫ শতাংশ কর হার নির্ধারণের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার রাজধানীর গুলশান ক্লাবে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবিগুলো তোলেন টেক্সটাইল খাতের নেতৃবৃন্দ। বিটিএমএর সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “এআইটি কার্যকর হলে টেক্সটাইল শিল্প আরও গভীর সংকটে পড়বে। এরই মধ্যে উচ্চ জ্বালানি মূল্য, শ্রম ব্যয় ও রপ্তানি প্রণোদনা হ্রাসের কারণে শিল্প চাপে আছে।”
তিনি বলেন, “সরকার যদি সোমবারের (৭ জুলাই) মধ্যে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করে, তাহলে তা সরকারের রাজস্ব আয়েও প্রভাব ফেলবে। ইতোমধ্যে বন্দরগুলোতে কটন আটকে গেছে, কেউ ছাড় করছে না।”
আয়কর কর্তৃপক্ষ বলছে, এআইটি সমন্বয়যোগ্য হলেও মামুন বলেন, “সরকারের অ্যাকাউন্টে টাকা গেলে তা ফেরত পাওয়ার নজির নেই। এই কর দিতে হলে নতুন করে ব্যাংক ঋণ নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, নতুন কর কাঠামো কার্যকর হলে বর্তমানে ২৭.৫ শতাংশ করহার বেড়ে ৫৯ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যা বাংলাদেশি টেক্সটাইল মিলগুলোকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় দুর্বল করে ফেলবে।
বিটিএমএ আরও দাবি করে, উৎপাদন পর্যায়ে প্রতিকেজিতে ৫ টাকা হারে আরোপিত করও তুলে নিতে হবে, যা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কটন সুতা ও সিনথেটিক ফাইবারের ওপর প্রযোজ্য।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, বিকেএমইএর সহ-সভাপতি অমল পোদ্দার, বিটিটিএলএমইএর চেয়ারম্যান হোসেন মাহমুদ ও বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা মোহাম্মদ আইয়ুব।
বিটিএমএ সভাপতি রাসেল বলেন, “বর্তমানে আমার ডেনিম কারখানা স্থানীয়ভাবে সুতা কিনে টিকে থাকতে পারছে না। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে আমাকে ভারত থেকে সুতা আমদানি করতে হবে। কোনো দেশীয় টেক্সটাইল মিল এই নীতিতে টিকে থাকতে পারবে না।”
শিল্প সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এআইটি ও অতিরিক্ত করের বোঝা তুলে না দিলে দেশের প্রধান শিল্প খাতগুলোর একটি ধসে পড়তে পারে, যা রপ্তানি, কর্মসংস্থান ও সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।