ডেইলি প্রতিদিনের বাণী রিপোর্ট
প্রকাশিত: ১৪ মে ২০২৫, ১৮:১৯
নিজস্ব প্রতিবেদক — রাজধানী
আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি পর্যায়ে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব বিবেচনা করছে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৫ মে রাজস্ব বিভাগের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের কাছে উপস্থাপন করা হবে। এরপর ১৯ মে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে উপস্থাপিত হবে। বাজেট ঘোষণা হতে পারে ২ জুন।
এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত কয়েক বছর ধরে দেশে মূল্যস্ফীতি দীর্ঘসময় ধরে ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। এ কারণে প্রকৃত আয়ে চাপ পড়ছে জনগণের ওপর। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯.১৭ শতাংশ। এই বাস্তবতায় ব্যক্তি পর্যায়ে কর ছাড় কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে।
এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে করমুক্ত সীমা ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছিল। তবে অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো এই সীমা আরও বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছে। সিপিডি করমুক্ত আয়সীমা ৫০ হাজার টাকা বাড়ানোর সুপারিশ করেছে এবং এফবিসিসিআই এটি ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করার আহ্বান জানিয়েছে।
এছাড়া সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা কিছুটা শিথিল করার চিন্তা রয়েছে সরকারের। বর্তমানে ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে আগের বছরের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হয়। প্রস্তাব অনুযায়ী এই সীমা ১০ লাখ টাকায় উন্নীত হতে পারে, যা বিশেষ করে মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের জন্য সুবিধাজনক হবে।
আরও পড়ুন:
বর্তমানে ৪৫টি সরকারি-বেসরকারি সেবার ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক। তবে নতুন ব্যবসা শুরুতে ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণের ক্ষেত্রে রিটার্নের প্রমাণপত্র সাময়িকভাবে শিথিল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যদিও নবায়নের ক্ষেত্রে এটি অপরিবর্তিত থাকবে।
অন্যদিকে ব্যবসা খাতে কর অবকাশ সুবিধা ও হ্রাসকৃত করহারের বিষয়ে বড় কোনো ছাড় আসছে না বলে জানিয়েছে রাজস্ব বিভাগ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তির আওতায় সরকার রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তার অংশ হিসেবেই ধাপে ধাপে কর ছাড় প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া চলবে বলে জানা গেছে।
এই প্রস্তাবগুলো অনুমোদন পেলে আগামী অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য কিছুটা স্বস্তি আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।