খেলাপি ঋণ রেকর্ড পর্যায়ে; ছয়টি ব্যাংক একীভূত না অবসায়ন—চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসছে শিগগিরই
দেশের ব্যাংক খাত ইতিহাসের সবচেয়ে সংকটময় অবস্থায় পৌঁছেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। খেলাপি ঋণের পরিমাণ সর্বোচ্চ, মূলধন ঘাটতি এবং প্রভিশন ঘাটতিতে ভুগছে অনেক ব্যাংক। এমন প্রেক্ষাপটে দুর্বল ব্যাংকগুলোর বিষয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে ছয়টি দুর্বল ব্যাংকের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী মাসের শেষ দিকে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এসব ব্যাংকের মধ্যে সালম, শিকদার ও মহিউদ্দিন খান আলমগীরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের নাম রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব ব্যাংক একীভূত করবে, নাকি অবসায়নের পথে যাবে, সে নিয়ে চলছে আলোচনা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, একীভূতকরণের মাধ্যমে সংকট নিরসন সম্ভব না-ও হতে পারে। কারণ, দুর্বল ব্যাংকের সঙ্গে ভালো ব্যাংক একীভূত করলে পরবর্তীতে সেই ব্যাংকও ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
দুর্বল ব্যাংক অবসানের প্রক্রিয়াকে সহজ করতে সরকার নতুন একটি ‘ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ ২০২৫’ জারি করতে যাচ্ছে। সংসদ না থাকায় এটি অধ্যাদেশ আকারে প্রকাশ করা হবে। এই আইনের অধীনে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংক অবসায়নের জন্য আদালতে আবেদন করতে পারবে, অস্থায়ী প্রশাসক নিয়োগ দিতে পারবে, এমনকি ব্রিজ ব্যাংক গঠন ও পরে তৃতীয় পক্ষের কাছে হস্তান্তরের ব্যবস্থাও থাকবে।
এদিকে আমানতকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নতুন একটি ‘আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ’ এর খসড়াও তৈরি করা হয়েছে। এই খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে, ব্যাংক অবসানের ক্ষেত্রে প্রতিটি আমানতকারী সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত নিরাপদ থাকবেন। তবে পর্যালোচনায় দেখা গেছে, প্রস্তাবিত সীমা অনুযায়ী দুর্বল ব্যাংকগুলোর মাত্র ৪৫ থেকে ৬০ শতাংশ আমানতকারী সুরক্ষিত থাকবেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকারদের মতে, একীভূতকরণ বা অবসায়ন যাই করা হোক, যেন এতে আমানতকারীদের আস্থা নষ্ট না হয়। কারণ এই খাতের ওপরই নির্ভর করছে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি।