মিয়ানমারের সামরিক জান্তা আসন্ন নির্বাচনের আগে দেশটির সশস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর প্রতি বিরলভাবে শান্তিপূর্ণ সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে। তবে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) এবং জাতিগত সশস্ত্র দলগুলো এই প্রস্তাব দ্রুতই প্রত্যাখ্যান করেছে।
শনিবার জান্তাপন্থী সংবাদমাধ্যম The Global New Light of Myanmar-এ প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, “যদি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো আইনগত কাঠামোর মধ্যে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করে সরকারের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে চায়, সরকার তা স্বাগত জানাবে।”
এই আহ্বান এমন এক সময়ে এসেছে, যখন জান্তা বাহিনী দেশজুড়ে পিডিএফ ও জাতিগত বিদ্রোহীদের হাতে একের পর এক সামরিক পরাজয়ের মুখে পড়ছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখলের পর থেকেই দেশজুড়ে প্রতিবাদ এবং গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।
অভ্যুত্থানবিরোধী সংসদ সদস্যদের নিয়ে গঠিত ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) জান্তার প্রস্তাবকে “একটি প্রতারণাপূর্ণ কৌশল” বলে আখ্যা দিয়েছে। তারা বলেছে, “এই প্রস্তাব আসলে একটি ছদ্ম নির্বাচন বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা এবং বিরোধী শক্তিকে বিভক্ত ও দুর্বল করার অপচেষ্টা।”
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রধান গত মাসে জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর ও আগামী জানুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে আন্তর্জাতিক মহল এই নির্বাচনকে প্রহসন হিসেবে উল্লেখ করেছে।
উল্লেখযোগ্য যে, গত বছর সেপ্টেম্বরে তিনটি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতৃত্বে চালানো চমকপ্রদ এক অভিযানের পর জান্তা পক্ষ থেকে প্রথমবার শান্তি আলোচনার প্রস্তাব আসে। তবে সংঘর্ষ ও সহিংসতা অব্যাহত থাকায় সেই প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ হয়নি।
মাঠে লাগাতার প্রতিরোধ ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের আস্থাহীনতার প্রেক্ষিতে জান্তার সাম্প্রতিক আহ্বানকে অনেকেই রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছেন। মিয়ানমারের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে তাই অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।