ডেইলি প্রতিদিনের বাণী রিপোর্ট
প্রকাশিত: ১৮ মে ২০২৫, ১৩:১০
নিজস্ব প্রতিবেদক
কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট উড্ডয়নের সময় বাম পাশের ল্যান্ডিং গিয়ারের একটি চাকা খুলে পড়ে যায়। এ ঘটনায় ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন এভিয়েশন সংশ্লিষ্টরা। ফ্লাইটটি ড্যাশ-৮ সিরিজের উড়োজাহাজ ছিল এবং সৌভাগ্যক্রমে নিরাপদে শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করতে সক্ষম হয়।
শনিবার রাতে একাধিক সূত্র জানায়, উড়োজাহাজটির ল্যান্ডিং গিয়ারে অন্তত দেড় বছর ধরে কোনো রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। অথচ উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি ছয় মাস অন্তর ল্যান্ডিং গিয়ার মেইনটেনেন্স করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নিয়মিত গ্রিজিং না হওয়ার কারণেই চাকা খুলে পড়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উড়োজাহাজটি কক্সবাজার থেকে উড্ডয়নের সময় পাশেই থাকা আরেক ফ্লাইটের পাইলট লক্ষ্য করেন, কিছু একটি পড়ে যাচ্ছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে শাহজালাল বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে বিষয়টি অবহিত করেন। এরপর এটিসি ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহকে সতর্ক করে। তখনই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। ফ্লাইটটি দিনে ছিল বলে দৃষ্টিগোচর হয়েছে, রাত হলে হয়তো বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
বিমান বাংলাদেশ সূত্র জানায়, ঘটনার পর ফ্লাইট সেফটি ম্যানুয়াল ৭.৮ ধারায় একটি চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা করা হয়েছে ক্যাপ্টেন এনামুল হক তালুকদারকে। আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, এই উড়োজাহাজটি ইতোমধ্যে ৯ হাজার ৭৬৮ বার ল্যান্ডিং করেছে এবং সর্বশেষ ইন্সপেকশনে ‘‘সকল হুইল কন্ডিশন এবং সিকিউরিটি সেটিসফ্যাকটরি’’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। বিষয়টি এখন সেই ইন্সপেকশনকারী ইঞ্জিনিয়ার ও প্রকৌশল বিভাগের দায়িত্বের মধ্যে পড়ছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ কর্মকর্তা রওশন কবীর বলেন, প্রতিটি উড়োজাহাজ নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী ইন্সপেকশন করা হয় এবং আন্তর্জাতিক নিয়মকানুনও মানা হয়। তবে যান্ত্রিক ত্রুটি হতেই পারে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে গাফিলতির বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকি প্রক্রিয়া নিয়ে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নিয়মিত তদারকি ও কঠোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়।