ডেইলি প্রতিদিনের বাণী রিপোর্ট
প্রকাশিত: ১৭ মে ২০২৫, ০৩:০০
চট্টগ্রাম প্রতিবেদক
কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে আসার সময় বাম পাশের ল্যান্ডিং গিয়ারের একটি চাকা খুলে পড়ে। এই জটিল পরিস্থিতির মধ্যেও প্রথম চেষ্টাতেই সফলভাবে ঢাকায় অবতরণ করতে সক্ষম হন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিজি-৩৪২ এর পাইলট ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহ।
অবতরণের আগের শেষ তিন মিনিট ছিল সবচেয়ে বেশি উত্তেজনাকর। তখন ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) পাইলটের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে।
শুক্রবার দুপুর ২টা ১৯ মিনিটে যখন বিমানটি ঢাকায় এসে পৌঁছায়, তখন এটিসি থেকে জানতে চাওয়া হয়, রানওয়ে ১৪-তে অবতরণের সিদ্ধান্ত তিনি কনফার্ম করছেন কি না।
পাইলট ক্যাপ্টেন জামিল নিশ্চিত করে বলেন, “অ্যাফার্ম।” এটিসি তাৎক্ষণিক জানান, “রানওয়ে ১৪ অবতরণের জন্য প্রস্তুত, আপনি অবতরণ করতে পারেন।”
মাত্র ৯০ সেকেন্ড পর, দুপুর ২টা ২২ মিনিটে, বিমানটি নিরাপদে অবতরণ করে। রানওয়ের চারপাশে প্রস্তুত ছিল ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিট।
অবতরণের পর পাইলট জানান, “আলহামদুলিল্লাহ আমরা নিরাপদে অবতরণ করেছি। কন্ট্রোল টাওয়ারকে অনেক ধন্যবাদ। সহযোগিতা প্রশংসনীয়।”
এটিসি থেকে আবারও জানতে চাওয়া হয়, সবকিছু স্বাভাবিক কি না। উত্তরে পাইলট বলেন, “সবকিছু ঠিক আছে।”
এ সময় উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও কর্মীরা ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে হাততালি দেন।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, সাধারণত এমন ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে কিছুক্ষণ চক্কর দিয়ে তেল পোড়ানোর মাধ্যমে আগুন লাগার ঝুঁকি কমানো হয়। কিন্তু এই পাইলট তেল না পুড়িয়ে সরাসরি অবতরণ করেন, যার ফলে প্রস্তুতি আরও বাড়াতে হয় ফায়ার সার্ভিসকে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স জানায়, ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহ ও তার ক্রুদের দ্রুত সিদ্ধান্ত ও পেশাদারিত্বের ফলেই এই ঝুঁকিপূর্ণ ফ্লাইটটি নিরাপদে অবতরণ করে। তার ফ্লাইং অভিজ্ঞতা রয়েছে ৮০০০ ঘণ্টার বেশি।
ফ্লাইটের যাত্রীরা পাইলট, ক্রু এবং কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ঘটনার পর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্তে ক্যাপ্টেন এনাম তালুকদারকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনা প্রমাণ করে দেশীয় পাইলটদের দক্ষতা আন্তর্জাতিক মানের এবং জরুরি পরিস্থিতিতেও তারা প্রস্তুত।