বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট আবারও বড় পরিসরে কর্মী ছাঁটাই করেছে। বুধবার প্রতিষ্ঠানটি জানায়, দ্বিতীয় দফায় প্রায় ৯ হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এটি গত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ছাঁটাই।
ছাঁটাইয়ের বড় অংশ পড়েছে প্রতিষ্ঠানটির ভিডিও গেম বিভাগ এক্সবক্স ও অন্যান্য ইউনিটে। ওয়াশিংটনের রেডমন্ডে অবস্থিত মাইক্রোসফট সদর দপ্তরের ৮৩০ জন কর্মী এই তালিকায় রয়েছেন।
এক বিবৃতিতে মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “আমাদের দলগুলোকে সাফল্যের জন্য সঠিকভাবে গঠন করতে এই ধরনের সাংগঠনিক পরিবর্তন অব্যাহত থাকবে।”
এক্সবক্স বিভাগেও প্রভাব
এক্সবক্সের প্রধান নির্বাহী ফিল স্পেন্সার গেমিং ইউনিটের কর্মীদের একটি মেমো পাঠান, যেখানে তিনি বলেন, এই ছাঁটাইয়ের মাধ্যমে ভিডিও গেম ব্যবসাকে দীর্ঘমেয়াদি সফলতার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে এবং কৌশলগত বৃদ্ধি এলাকাগুলোর ওপর ফোকাস বাড়ানো হচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ
মাইক্রোসফটের এই গণছাঁটাই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠেছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা। বিশেষ করে প্রতিষ্ঠানটির হাই-১বি ভিসা আবেদন নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
২০২৪ সালে মাইক্রোসফটের ৪৭২৫টি হাই-১বি ভিসা অনুমোদিত হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ার দাবি অনুযায়ী, ২০২৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি ১৪,১৮১টি ভিসা আবেদন করেছে, যদিও এই সংখ্যা নিশ্চিত নয়।
একজন এক্স ব্যবহারকারী লিখেছেন, “মাইক্রোসফট ৬ হাজারের বেশি হাই-১বি ভিসা আবেদন করেছে। মনে হচ্ছে তারা কম মজুরি দেওয়া বিদেশি কর্মী দিয়ে বর্তমান কর্মীদের প্রতিস্থাপন করতে চায়।”
আরেকজন মন্তব্য করেন, “৯ হাজার কর্মী ছাঁটাই করে ১৪ হাজার ভিসা চাওয়া মানে বিশ্বব্যাপী কর্মী আপগ্রেডের নামে বর্তমানদের বাদ দেওয়া।”
তৃতীয় একজন লেখেন, “মাইক্রোসফট যখন ৯ হাজার কর্মী ছাঁটাই করছে, তখন ৪৭১২টি হাই-১বি আবেদন করেছে ২০২৫ সালের জন্য। এখন কোনো হাই-১বি ভিসা অনুমোদন দেশের নাগরিকদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা।”
ইতিহাসে দ্বিতীয়বার, আরও ছাঁটাই চলমান
এই ছাঁটাইয়ের আগে গত মাসেও প্রতিষ্ঠানটি রেডমন্ড সদর দপ্তর থেকে আরও ৩০০ কর্মী ছাঁটাই করেছিল। তারও আগে মে মাসে পিউজেট সাউন্ড অঞ্চলে প্রায় ২ হাজার কর্মী ছাঁটাই করা হয়।
মাইক্রোসফটের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা অ্যামি হুড এপ্রিল মাসে এক আয়ের প্রতিবেদনে বলেছিলেন, “আমরা উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন দল গঠনে মনোযোগ দিচ্ছি এবং ব্যবস্থাপনার স্তর কমিয়ে এনে প্রতিষ্ঠানকে আরও চটপটে করতে চাই।”
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি খাতে কর্মী ছাঁটাই বেড়েই চলেছে এবং এটি ভবিষ্যত কর্মসংস্থানের দিকনির্দেশনা বদলে দিতে পারে। একই সঙ্গে বিদেশি কর্মী নীতির ওপর বিতর্ক আরও জোরালো হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।