পুলিশি হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক এবং নগরীর খুলশী এলাকায় জাকির হোসেন সড়ক অবরোধ করেছে ‘অ্যান্টি-ডিসক্রিমিনেশন স্টুডেন্ট মুভমেন্ট’ (এডিএসএম) ও তাদের মিত্র রাজনৈতিক দল ‘ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি’ (এনসিপি)।
মঙ্গলবার রাতে পটিয়া থানার সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার অভিযোগ তুলে বুধবার (২ জুলাই) সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে মহাসড়কে এবং দুপুর ৩টা ৩০ মিনিটে জাকির হোসেন সড়কে অবরোধ কর্মসূচি শুরু করে তারা।
অবরোধের ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা চরম ভোগান্তির মুখে পড়েন। অনেক যাত্রী বাধ্য হয়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে চেষ্টা করেন।
চোখে পড়ার মতোভাবে জাকির হোসেন সড়কের খুলশী অংশে বিক্ষোভকারীরা চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ের প্রবেশ পথও অবরুদ্ধ করে রাখে।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাত ৯টা ৩০ মিনিট ও ১১টায় পৃথক সময়ে এডিএসএম নেতাকর্মীদের ওপর পটিয়া থানা পুলিশ হামলা চালায়।
রিদওয়ান সিদ্দিকী, এডিএসএম-এর চট্টগ্রাম নগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, “আমরা রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা দীপঙ্কর দে-কে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার না করে আমাদের ওপরই হামলা চালায়।”
তিনি দাবি করেন, “হামলায় অন্তত ৪০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।”
পরে ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্র শিবির ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরাও আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে যোগ দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সকাল ১০টার দিকে শতাধিক আন্দোলনকারী পটিয়া থানার সামনে জড়ো হয়ে ওসির অপসারণ এবং ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান।
পুলিশ সূত্র জানায়, এডিএসএম কর্মীরা মঙ্গলবার রাতে দীপঙ্কর দে-কে আটক করে থানায় নিয়ে এলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং সেখানে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরে তাকে ‘জনতার আক্রমণ’ থেকে রক্ষার জন্য হেফাজতে নেয়।
পটিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জাহেদ মো. নজমুন নূর বলেন, “আন্দোলনকারীরা থানায় এসে দীপঙ্করের ওপর হামলা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে আমাদের চারজন পুলিশ সদস্যও আহত হন।”
এখন পর্যন্ত পটিয়া ও নগর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে প্রশাসন সক্রিয় রয়েছে।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তাদের প্রধান দাবি হলো, পটিয়া থানার ওসির অপসারণ ও হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা।