যুক্তরাষ্ট্রে হিপ-হপ তারকা শান ‘ডিডি’ কমসের বিরুদ্ধে চলমান যৌন পাচার মামলায় জুরি বোর্ড চারটি অভিযোগে রায়ে পৌঁছালেও মূল অভিযোগ র্যাকেটিয়ারিং ষড়যন্ত্র নিয়ে একমত হতে পারেনি।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেলে আদালতে জানানো হয়, জুরিরা র্যাকেটিয়ারিং অভিযোগে বিভক্ত এবং দুই পক্ষেই ‘অটল মতামত’ রয়েছে। বিচারক অরুণ সুব্রামানিয়ান রায় গ্রহণ না করে জুরিদের বুধবার আবার আলোচনার নির্দেশ দিয়েছেন।
কমসের আইনজীবী ও রাষ্ট্রপক্ষ এই সিদ্ধান্তে একমত হন যে, মাত্র দুই দিনের আলোচনার পর এখনও চূড়ান্ত রায়ে পৌঁছানো সম্ভব। আদালতের নির্দেশে deliberation পুনরায় শুরু হবে।
আদালতের নোট পাঠানোর পর কমস ছিলেন বিমর্ষ। তার আইনজীবীর দেয়া কাগজ চুপচাপ পড়তে দেখা যায়। পরে আদালত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে হৃদয় ছুঁয়ে চুমু ছুঁড়ে বলেন, “ভালোবাসি” এবং “আমি ঠিক আছি।”
কমসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তার খ্যাতি, অর্থ ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে দুই বান্ধবীকে জোর করে মাদকাসক্ত অবস্থায় যৌনকর্মীদের সঙ্গে মিলনে বাধ্য করতেন।
তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন এবং তার আইনজীবীরা বলছেন, কমসের জীবনধারা ‘স্বেচ্ছায়’ গৃহীত ছিল এবং এসব ঘটনাকে ঘরোয়া সহিংসতা বলা যেতে পারে, কিন্তু তা ফেডারেল অপরাধ নয়।
র্যাকেটিয়ারিং ষড়যন্ত্র মামলা অত্যন্ত জটিল, কারণ এটি প্রমাণ করতে হয় যে, অভিযুক্ত একটি অপরাধ সংগঠন পরিচালনা করতেন এবং অপহরণ, অগ্নিসংযোগসহ অন্যান্য অপরাধে জড়িত ছিলেন।
মঙ্গলবার জুরি অন্যতম প্রধান সাক্ষী ক্যাসি ভেনচুরার সাক্ষ্য পুনরায় পর্যালোচনার অনুরোধ জানায়। ভেনচুরা জানান, ২০১৬ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি হোটেলে কমস তাকে মারধর করেন, যার সিসিটিভি ফুটেজ ইতোমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে।
তারা আরও জানতে চান ২০১৩ সালে কানের উৎসবে যাওয়ার সময় ইয়টে ভেনচুরাকে বহিষ্কার ও হুমকি দেয়ার ঘটনা এবং নিউ ইয়র্কের এক হোটেলে যৌনকর্মী ড্যানিয়েল ফিলিপের উপস্থিতিতে তার উপর শারীরিক নির্যাতনের বিবরণ।
আলোচনার সময় এক জুরি সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয় যে তিনি বিচারকের নির্দেশ ঠিকমতো অনুসরণ করছেন না। বিচারক তখন পুনরায় আইন মেনে আলোচনা চালানোর নির্দেশ দেন।
মামলার পুরো সময় জুড়ে কমস সাক্ষ্য দেননি। তার আইনজীবীরা বহু রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীর জেরা করে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা চালিয়েছেন।
যদি সব অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে ৫৫ বছর বয়সী শান ‘ডিডি’ কমসের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। বিচার কার্যক্রম এখনও অব্যাহত রয়েছে।