Thursday, July 3, 2025
Homeআন্তর্জাতিকপারমাণবিক বোমায় নিহত শিশুদের স্মরণে আইসিএএনের অনলাইন স্মৃতিফলক উদ্বোধন

পারমাণবিক বোমায় নিহত শিশুদের স্মরণে আইসিএএনের অনলাইন স্মৃতিফলক উদ্বোধন

হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে নিহত ৩৮ হাজার শিশুর জীবনের গল্প তুলে ধরেছে নোবেলজয়ী সংস্থা

হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক বোমা হামলায় নিহত ৩৮ হাজার শিশুর স্মরণে অনলাইন স্মৃতিফলক চালু করেছে নোবেলজয়ী সংগঠন ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবলিশ নিউক্লিয়ার উইপনস’ (আইসিএএন)।

সংগঠনটি এক বিবৃতিতে জানায়, অনলাইন এই প্ল্যাটফর্মে ৪০০টিরও বেশি প্রোফাইলে শিশুদের জীবনের বর্ণনা, তাদের মৃত্যুর মর্মান্তিক বিবরণ এবং স্বজনদের শোকগাঁথা তুলে ধরা হয়েছে।

আইসিএএন জানায়, “এই হৃদয়বিদারক গল্পগুলো প্রকাশের মাধ্যমে আমরা শিশুদের স্মৃতি সংরক্ষণ করতে চাই এবং পারমাণবিক অস্ত্র সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্তির জন্য জনমত জোরদার করতে চাই।”

আগামী আগস্টে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক হামলার ৮০ বছর পূর্ণ হবে। ১৯৪৫ সালের ৬ ও ৯ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্র দুটি জাপানি শহরে পারমাণবিক বোমা ফেলেছিল, যা ইতিহাসে একমাত্র যুদ্ধকালীন পারমাণবিক হামলা।

বিস্ফোরণ এবং পরবর্তী তেজস্ক্রিয়তার ফলে হিরোশিমায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার এবং নাগাসাকিতে প্রায় ৭৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে শিশুদের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৮ হাজার।

আইসিএএনের অনলাইন প্ল্যাটফর্মে একটি কাগজের সারস আইকনে ক্লিক করে দর্শনার্থীরা শিশুদের ছবি ও তথ্য দেখতে পারবেন। প্রোফাইলের মধ্যে ১৩২ শিশুর ছবি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কেউ ছিল সদ্যোজাত, কেউ কিশোর।

১৩ বছর বয়সী তাদাকো তামেনো ছিলেন এমনই একজন, যিনি হিরোশিমা বিস্ফোরণের দুই দিন পর মায়ের কোলে কষ্টে মৃত্যুবরণ করেন। একইভাবে মিজুমাচি পরিবারের ছয় শিশু নাগাসাকিতে নিহত হয়, বেঁচে ছিলেন কেবল ১৪ বছর বয়সী সাচিকো।

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রসঙ্গে হিরোশিমা-নাগাসাকির উদাহরণ টানলে বিশ্বজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। হিরোশিমার শহর পরিষদ তার এই মন্তব্যের নিন্দা জানায়।

এদিকে, চলতি বছরের নাগাসাকি স্মরণসভায় ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ কোহেন যোগ দেবেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম। তবে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত কেবল নাগাসাকির অনুষ্ঠানে থাকলেও হিরোশিমায় উপস্থিত থাকবেন না বলে জানিয়েছে এনএইচকে।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যে দেখা গেছে, পারমাণবিক হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষের সংখ্যা এবার প্রথমবারের মতো এক লাখের নিচে নেমে এসেছে। মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত জীবিতদের সংখ্যা ৯৯,১৩০ এবং গড় বয়স ৮৬.১৩ বছর।

২০১৭ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী আইসিএএন বলছে, স্মৃতিফলকের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পারমাণবিক অস্ত্রের ধ্বংসাত্মক পরিণতি সম্পর্কে সচেতন করার একটি প্রচেষ্টা এটি।

RELATED NEWS

Latest News