Friday, July 4, 2025
Homeজাতীয়পদ্মা সেতু দুর্নীতির অভিযোগে ফের তদন্ত শুরু করলো দুদক

পদ্মা সেতু দুর্নীতির অভিযোগে ফের তদন্ত শুরু করলো দুদক

২০১৪ সালে অব্যাহতির সিদ্ধান্তে অনিয়ম, পুরনো কর্মকর্তাদেরও জবাবদিহির আওতায় আনার ইঙ্গিত

পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ তদারকির জন্য পরামর্শক ফার্ম নিয়োগে দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার দুদক প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. আবদুল মোমেন।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে তৎকালীন দুদক প্রশাসন যুক্তিসঙ্গত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রায় জোর করেই অব্যাহতি দিয়েছিল। তবে এখন নতুন তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা হবে। পাশাপাশি, যেসব সাবেক দুদক কর্মকর্তা মামলাটি প্রভাবিত করতে ভূমিকা রেখেছেন, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।

দুদক চেয়ারম্যান জানান, প্রাথমিক তদন্তে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনিয়ম ধরা পড়েছে, যেগুলো আগে উপেক্ষা করা হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে—প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি একাধিকবার অপ্রয়োজনীয়ভাবে পুনর্গঠন, প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহে ব্যর্থতা, পরামর্শক ফার্মের কর্মকর্তাদের জীবনবৃত্তান্ত যথাযথভাবে যাচাই না করা এবং বারবার অপ্রয়োজনীয়ভাবে সামগ্রী কেনা।

২০১২ সালে বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ এনে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে তদন্ত শুরু করে সরকার এবং দুদক।

২০১৪ সালে ‘ফাইনাল রিপোর্ট টু’ নামে একটি রিপোর্টে বলা হয়, দুর্নীতির প্রমাণ মিললেও অভিযুক্তদের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। ফলে সেতু বিভাগ, সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাবেক কর্মকর্তাসহ সব সাতজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

তালিকায় ছিলেন সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রিয়াজ আহমেদ জাবের এবং কানাডার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস।

প্রথম তথ্য বিবরণীতে নাম ছিল সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন এবং সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীরও। ‘ফাইনাল রিপোর্ট টু’-এর মাধ্যমে তারাও অব্যাহতি পান।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতা হারায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। এরপরই রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের পরিবর্তন শুরু হয়।

নতুন দুদক প্রশাসন দায়িত্ব নিয়ে ৩১ ডিসেম্বর সিদ্ধান্ত নেয়, পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলার পুনঃতদন্ত করা হবে।

দুদকের এই পদক্ষেপকে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

  • বিষয়াদি সম্পর্কে আরও পড়ুন:
  • দুদক

RELATED NEWS

Latest News