Friday, June 27, 2025
Homeআন্তর্জাতিকনিউ ইয়র্কে মেয়র প্রাইমারিতে জোহরান মামদানির ঐতিহাসিক জয়

নিউ ইয়র্কে মেয়র প্রাইমারিতে জোহরান মামদানির ঐতিহাসিক জয়

ট্রাম্পের কটাক্ষ, ডেমোক্রেটিক প্রতিষ্ঠানের ধাক্কা—নিউ ইয়র্ক রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা

নিউ ইয়র্ক সিটির ডেমোক্রেটিক মেয়র প্রাইমারিতে বড় ধরনের চমক এনে দিয়েছেন প্রগ্রেসিভ প্রার্থী জোহরান মামদানি। মাত্র ৩৩ বছর বয়সী এই প্রার্থীর জয় ডেমোক্রেটিক প্রতিষ্ঠানে আলোড়ন তুলেছে এবং সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমোকে পরাজিত করেছে।

নগর নির্বাচন কমিশনের দেওয়া প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, ৯৫ শতাংশ ভোট গণনায় মামদানি পেয়েছেন ৪৩ শতাংশ ভোট, যেখানে কুওমো পেয়েছেন প্রায় ৩৬ শতাংশ।

উগান্ডায় জন্ম নেওয়া, দক্ষিণ এশীয় মুসলিম বংশোদ্ভূত মামদানি, যিনি বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ারের সন্তান, তার প্রচারণা চালিয়েছেন হাউজিং, চাইল্ড কেয়ার এবং বিনামূল্যে গণপরিবহনের মতো জনকল্যাণমূলক ইস্যু নিয়ে।

তার এই বিজয়কে অনেকেই নিউ ইয়র্ক শহরের রাজনীতির জন্য একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত হিসেবে দেখছেন। কুওমো এই ফলাফলের পর পরাজয় স্বীকার করে বলেন, “আজ রাত আমাদের ছিল না। আমি তাকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছি।”

বিজয়ের পর মামদানি বলেন, “আজ রাত ইতিহাস রচিত হয়েছে। নিউ ইয়র্কবাসীরা এমন এক শহরের জন্য দাঁড়িয়েছে যেখানে তারা টিকে থাকতে পারে।”

নির্বাচনটি র‍্যাংকড-চয়েস ভোটিং পদ্ধতিতে হলেও মামদানির বিশাল ব্যবধানের কারণে ফল উল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

এই নির্বাচনে মামদানির জয় ডেমোক্রেটিক দলের ভেতরে নীতিগত বিভাজনের প্রতিফলন ঘটিয়েছে। তরুণ ভোটারদের মধ্যে প্রগ্রেসিভ নীতিমালার প্রতি সমর্থন আরও একবার প্রমাণিত হলো।

বিজয়ের একদিন পর, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশালে মামদানির বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ শুরু করেন। তাকে “১০০ শতাংশ কমিউনিস্ট উন্মাদ” বলে আখ্যায়িত করেন ট্রাম্প এবং তার বর্ণনা, বুদ্ধিমত্তা এবং রাজনৈতিক সংযোগ নিয়ে ব্যঙ্গ করেন।

ট্রাম্প অভিযোগ করেন, সিনেটর চাক শুমার মামদানির কাছে “নতজানু” হয়েছেন। একই সঙ্গে মামদানির ফিলিস্তিনি অধিকারের পক্ষে অবস্থান ও ইসরায়েলবিরোধী মন্তব্য নিয়েও সমালোচনা করেন।

এই মন্তব্যগুলোকে অনেকেই ইসলামফোবিক ও বর্ণবাদী হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে জাতিগত সংবেদনশীলতা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

তবে মামদানির সমর্থকদের মধ্যে এই আক্রমণে ভীতি দেখা যায়নি। বরং তাদের মতে, এই বিজয় শুধু ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নয়, বরং পুরো কেন্দ্র-ভিত্তিক রাজনীতির বিপরীতে একটি প্রগতিশীল অবস্থানের প্রতিচ্ছবি।

এই ফলাফলের পর রিপাবলিকান প্রতিক্রিয়াও দ্রুত এসেছে। নিউ ইয়র্ক সিটির রিপাবলিকান মেয়র প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া মামদানিকে “উগ্র” বলে উল্লেখ করেন। টেক্সাসের সিনেটর টেড ক্রুজ নিউ ইয়র্কবাসীদের আহ্বান জানান “যারা কমিউনিস্ট নন, তারা যেন টেক্সাসে চলে আসেন।”

বর্তমানে নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিতে কুইন্স থেকে নির্বাচিত মামদানি এখন সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেবেন। সেখানে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস, যিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

RELATED NEWS

Latest News