নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনের ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জোহরান মামদানিকে ঘিরে জাতিগত পরিচয় সংক্রান্ত বিতর্ক দানা বেঁধেছে। সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদনে তিনি নিজেকে ‘ব্ল্যাক বা আফ্রিকান-আমেরিকান’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। অথচ বৃহস্পতিবার দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি নিজেকে এই পরিচয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত মনে করেন না বলে জানান।
জোহরান মামদানি বর্তমানে নিজেকে “একজন আমেরিকান, যার জন্ম আফ্রিকায়” বলে পরিচয় দেন। তিনি উগান্ডায় জন্মগ্রহণ করেন এবং বর্তমানে নিউইয়র্কের জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হ্যাক হওয়া এক অভ্যন্তরীণ ডেটাবেইসে দেখা গেছে, মামদানি কলম্বিয়ায় ভর্তির সময় ‘এশিয়ান’ ও ‘ব্ল্যাক বা আফ্রিকান-আমেরিকান’ উভয় ঘরে টিক দিয়েছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তিনি সেখানে ভর্তি হতে পারেননি।
এ বিষয়ে ব্যাখ্যায় মামদানি বলেন, “ভারতীয়-উগান্ডীয়দের জন্য আলাদা কোনো ঘর ছিল না, তাই আমি একাধিক ঘরে টিক দিয়ে আমার পরিচয় প্রকাশের চেষ্টা করেছি।” তিনি আরও জানান, নির্ধারিত ঘরের বাইরে ‘উগান্ডান’ বলে উল্লেখ করেছিলেন।
তিনি বলেন, “যদিও এসব ঘর অনেক সীমাবদ্ধ, তারপরও আমি চেয়েছিলাম আমার আবেদন যেন আমার পুরো পরিচয়কে তুলে ধরে।”
মেয়র পদে প্রার্থিতার সময় তিনি কখনো নিজেকে ‘ব্ল্যাক’ বা ‘আফ্রিকান-আমেরিকান’ হিসেবে প্রচার করেননি। বরং তার প্রচারণায় মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় পরিচয়কে গুরুত্ব দিয়েই জনসংযোগ হয়েছে।
মামদানি বর্তমানে নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামসের প্রতিপক্ষ হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। এনপিআরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “প্রথম দক্ষিণ এশীয় ও মুসলিম নির্বাচিত কর্মকর্তা হিসেবে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি দেখে নিজ সম্প্রদায়ের জাগরণ দারুণভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, মামদানির পিতা কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন, যখন তিনি ভর্তির আবেদন করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মেইনের বোডোইন কলেজে ‘আফ্রিকানা স্টাডিজ’ বিষয়ে পড়াশোনা করেন।
তবে এই জাতিগত পরিচয় সংক্রান্ত ইস্যু এখন তার প্রচারণায় একটি আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। বিশেষ করে বর্ণগত সংবেদনশীলতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে বৈষম্য ও সুবিধা সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলমান বিতর্কের প্রেক্ষাপটে এই ঘটনা আরও আলোচিত হয়ে উঠছে।