গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথে ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করতে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে তিনি বলেন, “গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় যারা বাধা সৃষ্টি করছে, তারা গোপনে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, এই ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করা।”
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এ সমাবেশে তিনি আরও বলেন, “বর্তমান সরকার যদি সত্যিকারের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হতো, তাহলে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচার বিভাগ সংস্কার করে জনগণকে ক্ষমতায় ফেরত দিত।”
মিটফোর্ডে এক স্ক্র্যাপ ব্যবসায়ীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আমাদের দল সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। কিন্তু তারপরও তারেক রহমানকে নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে যে আলোচনা চলছে, তা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ থেকে মনোযোগ সরানোর কৌশল। গত ৫৪ বছরে দেশে কখনো এ পদ্ধতি চালু হয়নি, এখন হঠাৎ কেন এসব তুলে ধরা হচ্ছে?”
ড. জাহিদ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “জনগণকে বেশিদিন শক্তিহীন করে রাখা যাবে না। তারা জেগে উঠলে দায়ীদের প্রতিশোধের আগুনে ভস্ম হতে হবে।”
তিনি বলেন, “এক সময় যে ঐক্য নিয়ে স্বৈরতন্ত্রকে বিদায় করা হয়েছিল, সেই ঐক্য নিয়েই এই সরকারবিরোধী আন্দোলন সফল হবে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবেই। ষড়যন্ত্রকারীরা ব্যর্থ হবে।”
গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এটি নিছক ঘটনা নয়, এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে।”
তিনি বলেন, “ফরিদপুরে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হয়েছে, রাজবাড়ী, নড়াইলেও কোনো ঘটনা ঘটেনি। অথচ গোপালগঞ্জে হামলা হয়েছে। তাই বাইরে নয়, নিজেদের মধ্যেও যারা ষড়যন্ত্র করছে, তাদের খুঁজে বের করতে হবে।”
জুলাই–আগস্টের আন্দোলনে পেশাজীবীদের ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, “আজ রাজনৈতিক নেতারা ব্যক্তি স্বার্থে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে বিভাজন বন্ধ করার আহ্বান জানান এবং সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনার জন্য সরকারকে দায়ী করেন। সেনা মোতায়েন ও ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও সরকার জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।