Saturday, September 27, 2025
Homeজাতীয়রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বৈশ্বিক তহবিল ও রাজনৈতিক সমাধানের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বৈশ্বিক তহবিল ও রাজনৈতিক সমাধানের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বক্তব্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানান তিনি

রোহিঙ্গাদের জন্য বৈচিত্র্যময় ও অতিরিক্ত বৈশ্বিক তহবিল নিশ্চিত করার পাশাপাশি রাজনৈতিক সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ পরিষদে বক্তব্য রাখেন তিনি।

ড. ইউনূস বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শুধু মানবিক সহায়তা বাড়ানো নয়, বরং মিয়ানমার বা রাখাইনের অ-রাষ্ট্রীয় শক্তির ওপর চাপ প্রয়োগ করে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে। এর মাধ্যমে রাখাইনের জাতিগত জনগোষ্ঠীর সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সমঅধিকারের ভিত্তিতে সংযুক্ত করতে হবে।

তিনি জানান, প্রতিবেশী দেশগুলোকেও তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। আট বছর ধরে সংকট চললেও কোনো স্থায়ী সমাধান আসেনি। বর্তমানে বাংলাদেশ কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১৩ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে।

আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের মাধ্যমে বৈশ্বিক ঐক্য ও তহবিল সংগ্রহ বাড়ানোর প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। সেই সঙ্গে একটি সময়সীমাবদ্ধ রোডম্যাপ প্রণয়ন করে স্থায়ী সমাধানের প্রক্রিয়া শুরু করার আহ্বান জানান।

ড. ইউনূস বলেন, মিয়ানমারের চলমান সংঘাত শুধু আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলছে না, বরং বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনও অনিশ্চিত করে তুলছে। তিনি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে নতুন রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে এবং এতে চাপ আরও বাড়ছে।

প্রধান উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো বৈষম্যমূলক নীতি ও নিপীড়নের অবসান জরুরি। একটি নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং মর্যাদাপূর্ণ পুনঃএকীভূতকরণ নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ এই সংকটে নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের পর দ্বিতীয় ভুক্তভোগী। তবে এটি মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক কোনো ইস্যু নয়। বাংলাদেশ দায়িত্বশীল প্রতিবেশী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সদস্য হিসেবে তার ভূমিকা পালন করছে।”

ড. ইউনূস সতর্ক করে বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরে জীবনযাত্রার ন্যূনতম মান রক্ষার ক্ষেত্রেও অর্থ সংকট দেখা দিয়েছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, জরুরি সহায়তার জন্য তহবিলের বড় ঘাটতি রয়েছে। নতুন অর্থায়ন না এলে প্রতিজন রোহিঙ্গার মাসিক রেশন কমে দাঁড়াবে মাত্র ৬ মার্কিন ডলার, যা ক্ষুধা ও অপুষ্টি বাড়াবে এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করবে।

তিনি দাতাদের প্রতি আহ্বান জানান দ্রুত নতুন অবদান রাখার জন্য, যাতে সম্ভাব্য বিপর্যয় এড়ানো যায়।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের নেতা সাঈদ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরসহ বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যরা। বৈদেশিক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

RELATED NEWS

Latest News