Thursday, September 4, 2025
Homeআন্তর্জাতিকবেইজিংয়ে সামরিক কুচকাওয়াজে একসঙ্গে শি জিনপিং, পুতিন ও কিম জং উন

বেইজিংয়ে সামরিক কুচকাওয়াজে একসঙ্গে শি জিনপিং, পুতিন ও কিম জং উন

চীনের আধুনিক সামরিক শক্তি প্রদর্শন, নতুন বিশ্বব্যবস্থার বার্তা

চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে আয়োজিত এক বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজে বুধবার প্রথমবারের মতো একসঙ্গে জনসমক্ষে উপস্থিত হন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন।

এই কুচকাওয়াজটি অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের বিরুদ্ধে চীনের বিজয়ের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে। অনুষ্ঠানে নতুন সামরিক সরঞ্জাম উন্মোচন করা হয়, যার মধ্যে ছিল নতুন আন্তঃমহাদেশীয় পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র, হাইপারসনিক অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র, অত্যাধুনিক লেজার অস্ত্র এবং রোবোটিক কুকুর আকৃতির ড্রোন।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বৈশ্বিক ব্যবস্থার বিকল্প বার্তা দেওয়াই ছিল এ কুচকাওয়াজের অন্যতম লক্ষ্য। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির প্রেক্ষাপটে বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হচ্ছে, আর এই পরিস্থিতিতে চীন নিজেদের প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে।

কুচকাওয়াজ শুরুর আগেই নজর কাড়ে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কিম জং উনের দীর্ঘ করমর্দন এবং এরপর পুতিনকে অভিবাদন জানানোর দৃশ্য। তিন নেতা একসঙ্গে মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্যারেড উপভোগ করেন। এ দৃশ্যকে রাজনৈতিক নাট্যকলা হিসেবে বর্ণনা করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।

আয়োজনটি ছিল নিখুঁত পরিকল্পনা ও দেশপ্রেমিক আবেগে ভরপুর। প্রায় ৫০ হাজার অতিথির সামনে সৈন্যরা একযোগে পদক্ষেপ মিলিয়ে এগিয়ে যান। কোরাস দল একসঙ্গে সঙ্গীত পরিবেশন করে এবং নতুন সামরিক সরঞ্জাম প্রদর্শিত হলে দর্শকরা তা মোবাইলে ধারণ করেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এ আয়োজন শুধু চীনের অতীতের অর্জন বা বর্তমান সামরিক শক্তি প্রদর্শনের জন্য ছিল না, বরং ভবিষ্যতের বার্তাও দিয়েছে। শি জিনপিং নিজেকে বৈশ্বিক নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছেন এবং এ কুচকাওয়াজ তার অংশ।

চীনের সেনাবাহিনী বর্তমানে ব্যাপক আধুনিকায়নের পথে। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর অস্ত্র এবং পারমাণবিক সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশটি পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাচ্ছে।

বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন ভারসাম্য গঠনের এই প্রচেষ্টা পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের প্রদর্শন শুধু সামরিক নয়, কূটনৈতিক বার্তাও বহন করে, যা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।

RELATED NEWS

Latest News