চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মঙ্গলবার বেইজিংয়ে বৈঠকের সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘পুরনো বন্ধু’ বলে স্বাগত জানান। দুই দেশের শীর্ষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় এমন সময়ে, যখন উভয় দেশ যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ও ভিন্ন ভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
পুতিনও শি জিনপিংকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেন। তিনি বলেন, মস্কো ও বেইজিংয়ের সম্পর্ক বর্তমানে এক নজিরবিহীন উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বৈঠকের পর দুই নেতা তাদের শীর্ষ সহযোগীদের সঙ্গে ঝংনানহাই কমপ্লেক্সে একসাথে চা পান করেন। এই কমপ্লেক্সে চীনের শীর্ষ নেতাদের বাসভবন ও কার্যালয় অবস্থিত।
চীন বৈঠকের পর ঘোষণা দিয়েছে, রাশিয়ার নাগরিকদের জন্য এ মাসের শেষ থেকে ৩০ দিনের ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার চালু করা হবে। একই সঙ্গে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গ্যাস কোম্পানি গ্যাজপ্রম নতুন একটি পাইপলাইন নির্মাণ ও বিদ্যমান পথে সরবরাহ বাড়ানোর জন্য চীনা জ্বালানি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে চীন ও রাশিয়ার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে। যদিও চীন প্রকাশ্যে নিরপেক্ষতার কথা বলে, তবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তারা রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালু রেখেছে, যা মস্কোর জন্য অর্থনৈতিক সহায়তা হিসেবে কাজ করছে।
বৈঠকের আগের দিন দুই নেতা তিয়ানজিনে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) সম্মেলনে অংশ নেন। সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও শি ও পুতিনের আলাদা বৈঠক হয়।
চীন ও রাশিয়া একমত হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ মোকাবিলায় যৌথভাবে কাজ করা প্রয়োজন। শি জিনপিং বৈঠকে একটি “আরও ন্যায্য ও ভারসাম্যপূর্ণ বৈশ্বিক শাসন ব্যবস্থা” গঠনের প্রস্তাব দেন।
এছাড়া বৈঠকের আগে মঙ্গোলিয়ার প্রেসিডেন্ট খুরেলসুখ উখনা’র সঙ্গে শি ও পুতিনের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। মঙ্গোলিয়া দুই বৃহৎ দেশের মাঝখানে অবস্থান করছে এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হিসেবে বিবেচিত।
বিশ্লেষকদের মতে, চীন ও রাশিয়া বিশ্ব ব্যবস্থাকে পুরোপুরি পরিবর্তন করার ক্ষমতা এখনো না পেলেও নিজেদের স্বার্থে ক্রমাগত সংস্কারের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।