আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ‘মেক আমেরিকা হেলদি অ্যাগেইন’ বা মাহা (MAHA) শিরোনামের স্বাস্থ্য প্রতিবেদনটি ঘিরে তথ্যসূত্রের সঠিকতা নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্কের মধ্যে হোয়াইট হাউস একে তেমন গুরুত্ব না দেওয়ার অবস্থান নিয়েছে।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগ (HHS) প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। এর কিছু অংশে ব্যবহৃত সূত্র যাচাই করে দেখা যায়, কিছু গবেষণাপত্র আদৌ অস্তিত্বহীন কিংবা ভুলভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটি মূলত শিশুস্বাস্থ্যের অবনতির বিষয়ে কেন্দ্র করে তৈরি। এটি প্রকাশের কয়েক দিনের মধ্যেই বিভিন্ন মিডিয়া আউটলেট ও অনলাইন গবেষকরা একাধিক ভুল তথ্যসূত্র শনাক্ত করেন।
কিছু গবেষক ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশ্লেষকদের মতে, প্রতিবেদনের কিছু রেফারেন্স সম্ভবত এআই প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি হয়েছে, যা মাঝে মাঝে বাস্তবে না থাকা তথ্যসূত্রও তৈরি করতে পারে।
হোয়াইট হাউস এই অভিযোগ খারিজ করে বলেছে, এগুলো শুধুই ফরম্যাটিং সমস্যা।
“আমরা HHS সেক্রেটারি কেনেডি ও তার টিমের প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখি,” প্রেস ব্রিফিংয়ে এক মুখপাত্র বলেন। “আমি জানি মাহা প্রতিবেদনে কিছু ফরম্যাটিং সমস্যা ছিল, সেগুলো সংশোধন করা হচ্ছে।”
এরপর প্রশাসন প্রতিবেদনটির একটি হালনাগাদ সংস্করণ প্রকাশ করে।
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, এই ত্রুটিগুলো প্রতিবেদনটির মূল বক্তব্যকে প্রভাবিত করে না।
তবে সমালোচকরা বলছেন, শিশুদের টিকাদান সূচি নিয়ে প্রতিবেদনের কিছু মন্তব্য বিভ্রান্তিকর হতে পারে। অনেকে মনে করছেন, এটি একটি রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে লেখা হয়েছে, যার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি প্রশ্নবিদ্ধ।
প্রতিবেদনটি ৩ মাসের মধ্যে তৈরি করা হয়েছে। এতে শিশুদের স্থূলতা, মানসিক স্বাস্থ্য এবং দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার মত বিষয়গুলোর প্রতি দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সংকট অনেকদিন ধরেই উপেক্ষিত।
“আমরা বারবার দ্বন্দ্বপূর্ণ গবেষণার ওপর নির্ভর করেছি এবং যেটা অনেকেই সাধারণ জ্ঞান কিংবা মায়ের অনুভূতি বলে মানে, সেটাকে অবহেলা করেছি,” এমন মন্তব্য রয়েছে প্রতিবেদনে।
এই প্রতিবেদনটি তৈরি হয় ফেব্রুয়ারিতে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশের পর। সেই আদেশে ১০০ দিনের মধ্যে একটি স্বাস্থ্য পর্যালোচনা প্রকাশের নির্দেশ ছিল।
সমালোচকদের মতে, এত অল্প সময়ে বিশদ প্রতিবেদন তৈরির চাপে তথ্যসূত্র যাচাই পুরোপুরি করা সম্ভব হয়নি।
হোয়াইট হাউস প্রতিবেদনটির পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিলেও তথ্যসূত্রের বিতর্ক সহজে শেষ হবে না বলেই মনে করছেন অনেকেই।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এগুলো শুধু ফরম্যাটের ভুল, না কি এর ভেতরে আরও গভীর সমস্যা আছে।