ঝালকাঠির সদর উপজেলার পূর্ব গুয়ারটন এলাকায় শুক্রবার দুপুরে একটি বড় তালগাছ কেটে ফেলার পর অন্তত ৫০০টিরও বেশি বাবুই পাখির ছানা মারা গেছে। ওই গাছটিতে বহু পাখির বাসা ছিল, যা একমাত্র নিরাপদ প্রজনন ও বাসস্থান হিসেবে পরিচিত ছিল এলাকাজুড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে তালগাছটি কেটে ফেলে। গাছটি দীর্ঘদিন ধরে এলাকাজুড়ে বাবুই পাখির অন্যতম আবাসস্থল ছিল। এতে গাছের বাসায় থাকা ডিম, ছানা এবং অনেক পাখির মৃত্যু হয়।
গাছটি একটি সরকারি রাস্তার পাশে অবস্থিত ছিল এবং এর পাশে মোবারক আলী ফকির নামের এক ব্যক্তির জমি রয়েছে। গাছটি মিজানুর রহমান নামের একজনের কাছে বিক্রি করা হয় এবং পরে তিনিই গাছটি কেটে ফেলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “এটি শুধু একটি গাছ ছিল না, এটি ছিল একটি জীববৈচিত্র্যের কেন্দ্র।” তিনি আরও বলেন, “এতগুলো পাখির ছানা এভাবে মারা যাওয়া একটি ভয়াবহ বিষয়।”
ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। পরিবেশকর্মী ও স্থানীয়রা একে প্রকৃতির বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে আখ্যা দিয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, এমন নির্মমতা মেনে নেওয়া যায় না।
ঝালকাঠি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, “ঘটনার বিষয়ে প্রশাসন অবগত হয়েছে। বনবিভাগের একজন কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।” তিনি আরও জানান, “বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতায় দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
পরিবেশবাদীরা বলছেন, এমন ঘটনা কেবল জীববৈচিত্র্য ধ্বংসই করে না, মানুষের মানবিক মূল্যবোধেরও প্রশ্ন তোলে। তারা ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকেই ছবিসহ পোস্ট দিয়ে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছেন।
