Sunday, June 22, 2025
Homeজাতীয়ভিসি নিয়োগে মৃদু বা নিষ্ক্রিয় বিএনপি সংশ্লিষ্টদেরই বেছে নেওয়া হয়েছিল

ভিসি নিয়োগে মৃদু বা নিষ্ক্রিয় বিএনপি সংশ্লিষ্টদেরই বেছে নেওয়া হয়েছিল

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ভিসি নিয়োগ নিয়ে খোলামেলা মন্তব্য করলেন ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) নিয়োগে মৃদু বা নিষ্ক্রিয় বিএনপি সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদেরই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ের সাবেক পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

শনিবার ঢাকার গুলশানের একটি হোটেলে ‘এলডিসি উত্তরণের প্রেক্ষাপটে ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেট’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

আয়োজক ছিল গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “ভিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে আমি কিছু মানদণ্ড ঠিক করেছিলাম। একাডেমিক সাইটেশন, সততা ও দক্ষতার পাশাপাশি রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাও বিবেচনায় ছিল।”

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টদের নিয়োগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল। তাই আমরা মৃদু বা নিষ্ক্রিয় বিএনপি সংশ্লিষ্টদেরই খুঁজেছি। সেটাই ছিল বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্ত।”

এই নিয়ে বিএনপি মহলে হাস্যরসও তৈরি হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপি সমর্থকেরা বলে থাকেন, আমি কখনোই সক্রিয় বিএনপি-ঘনিষ্ঠ কাউকে নিইনি, শুধু মৃদু বা নিষ্ক্রিয়দের নিয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, “অরাজনৈতিক একটি সরকারের বড় সীমাবদ্ধতা হচ্ছে, এত শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও আমরা জানতাম না কাকে নিয়োগ দেওয়া উচিত। আমাদের হাতে রাজনৈতিক দলের মতো বিস্তৃত নেটওয়ার্ক ছিল না।”

এই সীমাবদ্ধতা কাটাতে তিনি ব্যক্তিগত পরিচিতদের পরামর্শ নিয়েছিলেন। এমনকি বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের কাছ থেকেও প্রস্তাব চেয়েছিলেন বলে জানান।

নিজের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আমি তাকে বন্ধু হিসেবে বলেছিলাম, এমন কিছু সৎ লোকের নাম দাও যারা শিক্ষা বা প্রশাসনে দায়িত্ব নিতে পারেন। তারা তো এক সময় দেশ চালিয়েছে, তাদের লোকজন তো আছেই।”

জবাবে ফখরুল বলেছিলেন, “গত ১৫ বছরে আমাদের কেউই কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিল না, ফলে কে সৎ কে দুর্নীতিগ্রস্ত, তা বোঝার সুযোগ আমার হয়নি।” এই খোলামেলা উত্তরকে সাধুবাদ জানান ওয়াহিদউদ্দিন।

তিনি আরও জানান, “আমরা কী কী সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তা লিখে রেখে যেতে চাই। প্রচারের জন্য নয়, যেন পরবর্তী সরকার বুঝতে পারে কী হয়েছে। তারা যদি সরে যায়, তাও যেন স্পষ্ট থাকে।”

এই বক্তব্যে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ভিসি নিয়োগে রাজনৈতিক বাস্তবতা ও নিরপেক্ষ সরকারের সীমাবদ্ধতা তুলে ধরেছেন, যা শিক্ষা প্রশাসনে রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে।

RELATED NEWS

Latest News