ঢাকার উত্তরা এলাকায় মাইলস্টোন স্কুলে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় সাত শিশুর মরদেহ আগুনে এতটাই পুড়ে গেছে যে তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সাইদুর রহমান।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমরা সাতটি মরদেহ পেয়েছি যেগুলোর কোন পরিচিত চিহ্ন অবশিষ্ট নেই। তাই এখন ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।”
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) তথ্য অনুযায়ী, সোমবার দুপুরে উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় পড়ে। এতে অন্তত ২০ জন নিহত হন এবং ১৭১ জন আহত হন।
ডা. সাইদুর জানান, হতাহতদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক মাত্র ১৫ জন, বাকিরা সবাই শিশু। এ ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরাই।
আরও পড়ুন | “হারিয়ে গেছে আমার বুকের টুকরো” — উত্তরা দুর্ঘটনার পর হাসপাতালগুলোতে কান্নার আহাজারি
তিনি আরও জানান, সোমবার দিনের মধ্যেই দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই নতুন করে রক্তদানের আহ্বান আপাতত অপ্রয়োজনীয়। তবে মঙ্গলবার পুনরায় রক্তের প্রয়োজন হতে পারে। এজন্য স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে, নিহতদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিচয়হীন মরদেহ নিয়ে স্বজনদের উৎকণ্ঠা আরও বেড়েছে। বিশেষ করে যাদের সন্তান নিখোঁজ, তাদের অনেকেই বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে বেড়াচ্ছেন পরিচয়ের আশায়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল দ্রুত সংগ্রহ করে মরদেহগুলো যথাযথভাবে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এই দুর্ঘটনায় আবারও প্রশ্ন উঠেছে পুরনো যুদ্ধবিমান ব্যবহারের নিরাপত্তা নিয়ে। তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত জনগণের মধ্যে উৎকণ্ঠা ও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।