বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সহায়তা প্রদানকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইড (USAID)-এর বাজেট বড় ধরনের কাটছাঁট করা হলে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী অতিরিক্ত ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে জানিয়েছে দ্য ল্যানসেট ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি গবেষণা।
গবেষণায় বলা হয়, ইউএসএইড বিলুপ্ত বা ব্যাপকভাবে দুর্বল হলে ৫ বছরের নিচে শিশুদের মধ্যেই মৃত্যু ঘটবে অন্তত ৪৫ লাখ জনের।
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে ইউএসএইডের ৮০ শতাংশ প্রকল্প বাতিল করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, অবশিষ্ট প্রায় ১ হাজারটি প্রকল্প এখন থেকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অধীনে পরিচালিত হবে এবং কংগ্রেসের সঙ্গে পরামর্শক্রমে এগুলোকে আরও কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, গত দুই দশকে ইউএসএইডের সহায়তায় বিশ্বজুড়ে ৯ কোটিরও বেশি মানুষের মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হয়েছে, যার মধ্যে ৩ কোটি শিশুর জীবন রক্ষা পেয়েছে।
২০১৫ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব মানবিক সহায়তার প্রায় ৩৮ শতাংশ প্রদান করত, যার মধ্যে অধিকাংশই ছিল ইউএসএইডের মাধ্যমে। ২০২৪ সালে দেশটি মোট ৬১ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক সহায়তা দেয়, যার অর্ধেকের বেশি ইউএসএইডের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই হঠাৎ সহায়তা বন্ধ বা কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক স্বাস্থ্যখাতে চরম বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে, বিশেষ করে আফ্রিকান দেশ ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, “২০২৫ সালের শুরুর দিকে ঘোষিত বাজেট কর্তন যদি বাতিল না করা হয়, তাহলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কোটি কোটি প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু ঘটতে পারে।”
বিশ্বজুড়ে দরিদ্র ও স্বাস্থ্যসেবাবঞ্চিত মানুষের জন্য এই সতর্কবার্তা এক গুরুতর বার্তা হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন মানবাধিকারকর্মী ও নীতিনির্ধারকরা।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সমন্বিতভাবে সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যখাতের গবেষক ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা।