জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার ওয়াশিংটন জানায়, সংস্থাটি ইসরায়েলবিরোধী পক্ষপাত দেখাচ্ছে এবং বিভাজনমূলক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইস্যুতে জোর দিচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, “ইউনেস্কো বর্তমানে একটি আদর্শগত বৈশ্বিক এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছে, যা জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যকেই কেবল গুরুত্ব দিচ্ছে। এটি আমাদের মূল্যবোধ ও স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।”
তিনি আরও বলেন, “ইউনেস্কো যখন তথাকথিত ‘প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রকে’ সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে গ্রহণ করে, তখন তা আমাদের নীতির সম্পূর্ণ বিপরীত। এর মাধ্যমে সংস্থার মধ্যে ইসরায়েলবিরোধী বক্তব্য আরও বিস্তৃত হয়েছে।”
উল্লেখ্য, ইউনেস্কোর মূল উদ্দেশ্য হলো শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতার মাধ্যমে বৈশ্বিক সংহতি গড়ে তোলা। এ সংস্থা বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানসমূহ রক্ষায় কাজ করে থাকে, যার মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ, তানজানিয়ার সেরেঙ্গেটি, এথেন্সের অ্যাক্রোপলিস এবং মিশরের পিরামিড।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনেস্কো থেকে বেরিয়ে যাওয়া নতুন ঘটনা নয়। এর আগে ১৯৮০-এর দশকে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগান ইউনেস্কোকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত ও সোভিয়েতপন্থী’ আখ্যা দিয়ে সদস্যপদ প্রত্যাহার করেছিলেন। পরবর্তীতে জর্জ ডব্লিউ বুশের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্র আবার সদস্যপদ ফিরে পায়।
সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউনেস্কোতে যুক্তরাষ্ট্রের সদস্যপদ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে ২০১৭ সালে এই সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব কূটনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিতে পারে। ইউনেস্কোসহ জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থায় রাজনৈতিক প্রভাব ও পক্ষপাত নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। তবে এ ধরনের সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে আরও কী প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে।