Friday, September 26, 2025
Homeআন্তর্জাতিকমাদকবাহী নৌকায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প

মাদকবাহী নৌকায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প

দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি জোরদার, বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে মানবাধিকার সংগঠন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে একটি নৌকায় হামলা চালিয়েছে। তাঁর দাবি, নৌকাটি মাদক পাচারে জড়িত ছিল এবং এতে থাকা তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে।

ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশালে পোস্ট করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা দপ্তর তাঁর নির্দেশে এই হামলা চালায়। তিনি লেখেন, “গোয়েন্দা তথ্য নিশ্চিত করেছে যে নৌকাটি অবৈধ মাদক বহন করছিল এবং এটি আমেরিকানদের ক্ষতির উদ্দেশ্যে পাচার পথে চলছিল।”

যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন কমান্ড (সাউথকম), যার দায়িত্বে দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলের ৩১টি দেশ রয়েছে, এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করছে। ট্রাম্প একটি আকাশ থেকে ধারণ করা ভিডিওও প্রকাশ করেন, যেখানে দেখা যায়, নৌকাটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাতের পর আগুন ধরে যায়। তবে তিনি জানাননি নৌকাটি কোথা থেকে এসেছিল বা হামলা ঠিক কোথায় হয়েছে।

এই ঘটনায় দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি আরও দৃশ্যমান হয়েছে। ইতোমধ্যে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি পারমাণবিক সাবমেরিন এবং অন্তত ১০টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি সম্প্রতি পুয়ের্তো রিকোতে অবতরণ করেছে।

গত সপ্তাহেও একই অঞ্চলে একটি অভিযানে ভেনেজুয়েলার একটি মাদকচক্রের জাহাজ ধ্বংসের দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ভেনেজুয়েলা সরকার বলেছে, নিহতদের কেউ দেশটির আলোচিত গ্যাং ‘ট্রেন দে আরাগুয়া’র সদস্য ছিল না। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করছে।

এদিকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই হামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ একে “অবৈধ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। সংগঠনটির ওয়াশিংটন পরিচালক সারাহ ইয়াগার বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র কর্মকর্তারা কাউকে মাদক পাচারের অভিযোগে সরাসরি হত্যা করতে পারেন না। এটি সশস্ত্র সংঘাত নয়, আর মানবাধিকার বাধ্যবাধকতা পাশ কাটানোও সম্ভব নয়।”

বিশ্লেষকদের মতে, মাদকবিরোধী অভিযানে সন্দেহভাজনদের আটক না করে সরাসরি হত্যা করার ঘটনা অস্বাভাবিক এবং এটি মার্কিন প্রশাসনের নীতি ও আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে এখনো এ নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। তবে দেশটির কংগ্রেস সদস্যরা এ ধরনের অভিযানের যৌক্তিকতা নিয়ে সরকারের কাছে জবাব চেয়েছেন।

RELATED NEWS

Latest News