কানাডার পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনিকে লেখা এক চিঠিতে তিনি জানান, এই শুল্ক আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
সোমবার থেকে ট্রাম্প এ ধরনের ২০টিরও বেশি চিঠি বিভিন্ন দেশের নেতাদের কাছে পাঠিয়েছেন। এর মাধ্যমে আবারও জোরদার হচ্ছে তার নেতৃত্বাধীন বাণিজ্য যুদ্ধের হুমকি।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর মধ্যে ইউএসএমসিএ (USMCA) চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছিল, যার লক্ষ্য ছিল ২১ জুলাইয়ের মধ্যে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো। তবে ট্রাম্পের নতুন হুমকির পর এই সময়সীমা পেছানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কারনি বৃহস্পতিবার রাতে এক্স-এ লিখেছেন, “বর্তমান বাণিজ্য আলোচনায় আমরা আমাদের শ্রমিক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থ রক্ষা করে আসছি। আগস্ট ১ এর পরিবর্তিত সময়সীমার মধ্যে একটি সমাধানে পৌঁছাতে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
২০১৭ সালে ট্রাম্প প্রথমবার প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন পুরনো নাফটা (NAFTA) চুক্তি বাতিল করে ইউএসএমসিএ চালু করেছিলেন। কিন্তু তার প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতেই তিনি ফের বাণিজ্য বাধা সৃষ্টি করেন।
এর আগেও কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প। তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পণ্যে, বিশেষ করে জ্বালানি খাতে, কানাডার জন্য শুল্ক হার কম রাখা হয়েছিল।
এছাড়া ট্রাম্প অভিযোগ করেন, প্রতিবেশী দেশগুলো অবৈধ অভিবাসন ও মাদক চোরাচালান বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
তবে ইউএসএমসিএর আওতায় কিছু পণ্যে শুল্ক মওকুফের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।
চিঠি আদান-প্রদানের সময় দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক উষ্ণ হতে শুরু করেছিল। গত ৬ মে হোয়াইট হাউসে কারনির সাথে ট্রাম্পের বৈঠক হয় এবং জুন মাসে কানাডায় অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনেও তারা সাক্ষাৎ করেন।
তবে কানাডা কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ট্যাক্স প্রত্যাহারের পর উভয় দেশের মধ্যে আলোচনার দ্বার খুলে যায়।
এদিকে, এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, যেসব দেশ এখনো তার কাছ থেকে শুল্ক সংক্রান্ত চিঠি পায়নি, তাদের ওপরও ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের চিন্তা করছেন তিনি।
ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে পারে।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা জানিয়েছেন, তিনি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আগ্রহী। তবে একইসাথে তিনি পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়েও বিবেচনা করছেন বলে জানান।
ট্রাম্পের চিঠিতে সাবেক ব্রাজিলীয় প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর প্রতি তার পক্ষপাতের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতি উত্তর আমেরিকার বাণিজ্য কাঠামোর ওপর দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব ফেলতে পারে।