যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ায় নির্মাণাধীন হুন্ডাই-এলজি ব্যাটারি কারখানায় অভিবাসন কর্তৃপক্ষের অভিযানে ৪৭৫ জন শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ান শ্রমিকও রয়েছেন। এটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় একক অভিযান বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এই অভিযানে আটক শ্রমিকদের হাতকড়া ও পায়ে শিকল পরিয়ে বাসে তোলা হয়। ঘটনাটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশনের জর্জিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্টিভেন শ্র্যাঙ্ক বলেন, “এই ১০০ একর এলাকাজুড়ে নির্মাণকাজে অবৈধ কর্মসংস্থান চলছে। সেই কারণেই অভিযান চালানো হয়েছে।”
এলজি এনার্জি সলিউশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের মোট ৪৭ জন কর্মী আটক হয়েছেন। এদের মধ্যে ৪৬ জন দক্ষিণ কোরিয়ান এবং একজন ইন্দোনেশিয়ান। এছাড়া প্রায় ২৫০ জন আটক শ্রমিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে কাজ করছিলেন এবং অধিকাংশই দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “আমাদের দেশের অভিবাসন আইনকে সম্মান করুন। আপনারা বিনিয়োগ করুন, দক্ষ মানুষ আইনসম্মতভাবে আনুন, কিন্তু একইসঙ্গে আমেরিকান শ্রমিকদেরও নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দিন।”
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ কোরিয়ার বড় বিনিয়োগ এসেছে। জুলাই মাসে সিউল ৩৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেয়। এছাড়া কোরিয়ান এয়ার বোয়িং থেকে ১০০টি বিমান কেনার চুক্তি করে। এ ধরনের সহযোগিতার মধ্যেই এই অভিযান দুই দেশের সম্পর্কে চাপ সৃষ্টি করেছে।
অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার জানিয়েছে, আটক শ্রমিকদের দ্রুত মুক্তির জন্য আলোচনা শেষ হয়েছে এবং তাদের শিগগিরই দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এলজি এনার্জি সলিউশনের এক কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের কর্মী ও অংশীদারদের দ্রুত মুক্তিই এখন সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার।”
অন্যদিকে হুন্ডাই জানিয়েছে, আটক হওয়া কারও সঙ্গে তাদের সরাসরি কর্মসংস্থান সম্পর্ক নেই।
যুক্তরাষ্ট্রে এর আগে ছোট ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিবাসন অভিযান চালানো হলেও জর্জিয়ার এই অভিযানকে সর্ববৃহৎ বলে উল্লেখ করেছে কর্তৃপক্ষ। এটি দেশটির অভিবাসন নীতির কঠোরতা এবং অভ্যন্তরীণ শ্রমবাজারকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নতুন দিক নির্দেশ করছে।