দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা উত্তেজনা বিরাজ করছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও আন্দোলনের পর পরিস্থিতি অস্থির হয়ে ওঠে। রবিবারের ঘটনার পর সোমবারও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নামেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় রবিবার শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষে তিন শতাধিক শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিক আহত হন। আহতদের মধ্যে তিনজন শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর। তাদের মধ্যে দুজনকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ইমতিয়াজ আহমেদ ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের মামুন মিয়া পার্কভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। মামুনের কিছুটা উন্নতি হলেও ইমতিয়াজের অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের নাঈমুল ইসলামকে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ হাসপাতালে জরুরি অস্ত্রোপচারের পর পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
পার্কভিউ হাসপাতালের আইসিইউ বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ আমিন জানান, মামুনের শারীরিক সাড়া কিছুটা ভালো হলেও ইমতিয়াজের অবস্থা সম্পর্কে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।
ধারা ১৪৪ জারি থাকা সত্ত্বেও সোমবারও শিক্ষার্থীরা হল থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। তাদের দাবি ছিল সহপাঠীদের ওপর হামলার বিচার ও উপাচার্যসহ প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তার পদত্যাগ।
অস্থির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা ও পুলিশের টহল জোরদার করা হয়। যৌথবাহিনী রাতভর অভিযান চালিয়ে হামলাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা করে। ঘটনাস্থলের পাশের জবরা গ্রাম কার্যত ফাঁকা হয়ে যায়। স্থানীয় দোকান ও যানবাহন বন্ধ ছিল।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল ইউনিয়নের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে সোমবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। সংগঠনের নেতারা বলেন, ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলে আন্দোলন চলবে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ অবরোধ করেন। বেলা ১১টার দিকে ছয় দফা দাবি জানানো হলেও বিকেল ৪টার মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পেলে শিক্ষার্থীরা জাব্বারের মোড়ে রেললাইন অবরোধ করেন। এতে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্প ও ডিবি) মো. রাসেল জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, হামলার সময় পুলিশ দর্শকের ভূমিকায় ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রশাসনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।