জাতিসংঘ আগামী নয় মাসের মধ্যে পাঁচটি মিশন থেকে ১,৩১৩ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীকে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গুরুতর তহবিল সংকট মোকাবিলায় গৃহীত জরুরি ব্যয় সংকোচন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেসের নির্দেশে গৃহীত হয়েছে, যেখানে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে ১৫ শতাংশ বাজেট হ্রাস করার কথা বলা হয়েছে।
কোন কোন মিশনে প্রভাব পড়বে
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিভাগের অফিস অব মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স (OMA) থেকে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, নিম্নলিখিত মিশনগুলোতে কর্মী সংখ্যা কমানো হবে:
৬১৭ জন – UNMISS (দক্ষিণ সুদান)
৩৪১ জন – MINUSCA (মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র)
২৬৮ জন – UNISFA (আবিই, সুদান)
৭৯ জন – MONUSCO (ডিআর কঙ্গো)
৮ জন – MINURSO (পশ্চিম সাহারা)
চিঠিতে সরাসরি জনবল কমানোর নির্দেশ না থাকলেও জানানো হয়েছে, বাজেট সংকোচনের কারণে মাঠপর্যায়ে “গুরুত্বপূর্ণ হ্রাস” ঘটবে।
তহবিল সংকটে জাতিসংঘ
বর্তমানে জাতিসংঘের মোট শান্তিরক্ষা বাজেট ৫.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান হ্রাসের ফলে সংস্থাটি গুরুতর অর্থ সংকটে পড়েছে।
এএফপি-র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের শান্তিরক্ষা সহায়তা ১.৩ বিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে ৬৮২ মিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনবে ২০২৫–২৬ অর্থবছরে।
এই বাজেট সংকোচন বিশ্বব্যাপী নয়টি অঞ্চলের মিশনে প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশের অবদান
বাংলাদেশ বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে তৃতীয় বৃহত্তম সেনা প্রেরণকারী দেশ, যেখানে ৫,৬৯৬ জন শান্তিরক্ষী কাজ করছেন, তাঁদের মধ্যে ৪৪৪ জন নারী।
১৯৮৮ সালে প্রথম শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নেওয়ার পর থেকে ১৬৮ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী প্রাণ হারিয়েছেন, এবং ২৫৭ জন আহত হয়েছেন।
আইএসপিআর জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ১,৭৮,৭৪৩ জন সেনাসদস্য ৪৩টি দেশে ৬৩টি মিশনে অংশ নিয়েছেন। ১৯৮৯ সাল থেকে বাংলাদেশ পুলিশও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে; এ পর্যন্ত ২১,৮১৫ জন সদস্য ২৪টি দেশে ২৬টি মিশনে কাজ করেছেন।