জাতিসংঘ সতর্কতা জানিয়েছে যে, গাজায় পাঁচ বছরের নিচে সমস্ত শিশু মারাত্মক অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে। ইসরায়েল গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবাহ বন্ধ রাখার ফলে এই সংকট আরও তীব্র হয়ে উঠেছে, এবং খাদ্য অভাবে শিশুদের মৃত্যু বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) জানায়, প্রায় ৩২০,০০০ শিশু এই বয়সের মধ্যে যারা অপুষ্টির শিকার, তাদের জীবন হুমকির সম্মুখীন। অপুষ্টির কারণে শিশুদের পুষ্টি সেবা ভেঙে পড়েছে, এবং তারা নিরাপদ পানি, স্তন্যদানজনিত বিকল্প খাদ্য এবং থেরাপিউটিক খাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এটি নিয়ে আল জাজিরার সাথে কথা বলার সময় পেডিয়াট্রিয়ান সিমা জিলানি বলেন, “অপুষ্টি শিশুদের পুরো শরীরকে প্রভাবিত করে, যার ফলে অঙ্গবিকলন হতে পারে।” তিনি আরও বলেন, গাজায় খাবারের অভাব শিশুদের জন্য মানসিকভাবে খুবই ক্ষতিকর এবং “শিশুরা তাদের বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ ধাপগুলো মিস করবে।”
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, সোমবার গাজার হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ছয়টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে একটি শিশু রয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অপুষ্টির কারণে মোট ১৮১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন, এর মধ্যে ৯৪ জন শিশু।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায় যে, “অ্যকিউট সট প্যারালাইসিস” রোগের ক্ষেত্রে মারাত্মক বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে, যা “সংক্রমণ এবং তীব্র অপুষ্টির” কারণে হচ্ছে। এর মধ্যে গুইলেইন-ব্যারি সিনড্রোমের কারণে তিনটি মৃত্যুর ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে, যা একটি বিরল অবস্থার কারণে সারা শরীরে অচেতনতা এবং পেশির দুর্বলতা সৃষ্টি করে।
গাজার সরকার অভিযোগ করেছে যে, ইসরায়েল ২২,০০০ এরও বেশি মানবিক সহায়তা ট্রাক গাজায় প্রবাহিত হতে বাধা দিয়েছে, এবং এটি “অনাহার, অবরোধ এবং বিশৃঙ্খলার” এক পরিকল্পিত কৌশল। ২ মার্চ থেকে গাজা পুরোপুরি ইসরায়েলি অবরোধের আওতায় রয়েছে, যখন ইসরায়েল দুই মাসের যুদ্ধবিরতি শেষ করে আবারও হামলা শুরু করে।
“মিডল ইস্টে সেভ দ্য চিলড্রেন”-এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জুলাই মাসে তাদের গাজার ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা ৪৩ শতাংশ গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারী অপুষ্টিতে আক্রান্ত ছিলেন। এটি মার্চ মাসের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি, যখন ইসরায়েল গাজায় পুরো অবরোধ পুনর্বহাল করেছিল। গাজায় শিশুদের জন্য ইনফ্যান্ট ফর্মুলা সরবরাহও বন্ধ রাখা হয়েছে।