দীর্ঘ ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধের পর সিরিয়ায় শরণার্থীদের পুনর্বাসন ও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে গতিশীল করতে আরও আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্ডি।
শুক্রবার দামেস্ক সফরকালে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “দেশের পুনরুদ্ধার একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ বিষয়ে সিরিয়া সরকারকে সহায়তা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া উচিত।”
২০১১ সালে শান্তিপূর্ণ সরকারবিরোধী বিক্ষোভের বিরুদ্ধে বর্বর দমন-পীড়নের পর সিরিয়ায় যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তাতে কোটি কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হন। তবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদের পতনের পর কিছু শরণার্থী ধীরে ধীরে ফিরে আসতে শুরু করেছেন।
গ্রান্ডি জানান, এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ মানুষ নিজ এলাকায় ফিরেছেন। এর মধ্যে ১৫ লাখ অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত এবং ৬ লাখের মতো মানুষ প্রতিবেশী দেশ লেবানন, জর্ডান ও তুরস্ক থেকে ফিরে এসেছেন। তবে এটি এখনো মোট বাস্তুচ্যুতদের একটি ক্ষুদ্র অংশ।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এখনো প্রায় ১ কোটি ৩৫ লাখ সিরিয়ান দেশে বা বিদেশে বাস্তুচ্যুত অবস্থায় রয়েছেন। সিরিয়ার অধিকাংশ অবকাঠামো ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ায় ঘরবাড়ি, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্যসেবা ও কাজের অভাব শরণার্থী প্রত্যাবাসনের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গ্রান্ডি বলেন, “ফিরে আসা মানুষদের টিকে থাকতে হলে দেশে পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন জরুরি। এটি শুধু প্রত্যাবাসিতদের জন্য নয়, বরং সব সিরিয়ানের জন্য প্রয়োজন।”
সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসআদ আল-শাইবানির সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই দীর্ঘমেয়াদী টেকসই প্রত্যাবাসন কিভাবে সম্ভব তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি দাতাদের আরও সহায়তা দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করার দিকটিও গুরুত্ব দেন।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল হওয়ার পর নতুন সিরিয়ান কর্তৃপক্ষ দেশ পুনর্গঠনে আন্তর্জাতিক সহায়তার আশা করছে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে দেশ পুনর্গঠনের সম্ভাব্য ব্যয় ৪০০ বিলিয়ন ডলার বলে উল্লেখ করা হয়েছে।