জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস বুধবার সকল দেশকে আহ্বান জানিয়েছেন যারা প্যারিস জলবায়ু চুক্তির অংশীদার, তারা যেন ২০৩৫ সালের জন্য নতুন জলবায়ু পরিকল্পনা তৈরি করে। তার মতে, এসব পরিকল্পনা বিদ্যমান প্রতিশ্রুতির তুলনায় দ্রুত এবং গভীরভাবে কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে আয়োজিত জলবায়ু নেতৃত্ব সম্মেলনে গুতেরেস এ আহ্বান জানান। তিনি দেশগুলোকে নতুন জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করতে বলেন, যাতে আসন্ন নভেম্বরে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিতব্য বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলন (COP30) এর আগে গতি সঞ্চার করা যায়।
এই সম্মেলন এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হলো যখন এক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতিসংঘে জলবায়ু পরিবর্তনকে ‘একটি প্রতারণা’ আখ্যা দেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীনের মতো দেশগুলোকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি গ্রহণের জন্য সমালোচনা করেন।
বিশ্বের সর্বাধিক ঐতিহাসিক নির্গমনকারী এবং বর্তমানে চীনের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারী যুক্তরাষ্ট্র প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে যাচ্ছে। এ চুক্তি ২০১৫ সালে গৃহীত হয়েছিল বৈশ্বিক উষ্ণতা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বাড়া ঠেকাতে।
গুতেরেস বলেন, “প্যারিস চুক্তি পরিবর্তন এনেছে। ২০১৫ সালের আগে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছিল ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। বর্তমানে তা কমে ২.৬ ডিগ্রিতে নেমেছে, যদি দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করে।”
তিনি আরও বলেন, “এখন আমাদের প্রয়োজন ২০৩৫ সালের জন্য নতুন পরিকল্পনা, যা অনেক দূর পর্যন্ত যাবে এবং আরও দ্রুত কার্যকর হবে।”
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো তাদের নতুন জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। তারা আপাতত একটি অস্থায়ী লক্ষ্য জমা দেওয়ার খসড়া প্রস্তুত করেছে, যা পরে পরিবর্তন হতে পারে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে নজর রয়েছে চীনের দিকে। দেশটি আগে ঘোষণা দিয়েছিল ২০৬০ সালের মধ্যে নিট শূন্য নির্গমন অর্জন করবে। গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার’-এর হিসেবে, এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে ২০২৪ সালের শীর্ষ পর্যায়ের তুলনায় ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ নির্গমন কমাতে হবে।