Monday, July 21, 2025
Homeআন্তর্জাতিকরাশিয়ান গুপ্তচরদের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের নতুন নিষেধাজ্ঞা

রাশিয়ান গুপ্তচরদের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের নতুন নিষেধাজ্ঞা

সাইবার হামলা ও বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার অভিযোগে জিআরইউ কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা, ইউরোপের চাপও বাড়ছে

যুক্তরাজ্য রাশিয়ার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা জিআরইউ’র ১৮ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। অভিযোগ, তারা যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপজুড়ে “দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিকর সাইবার কর্মকাণ্ড” চালিয়েছে, যা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রত্যক্ষ নির্দেশে হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

বিদেশমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, এই কর্মকাণ্ড ইউক্রেনে যুক্তরাজ্যের সমর্থনের প্রতিক্রিয়ায় পরিচালিত হয়েছে এবং এতে ইউরোপে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন একই সময়ে রাশিয়ার ওপর তাদের “সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা” জারি করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে নর্ড স্ট্রিম প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনের সাথে সম্পর্কিত লেনদেন নিষিদ্ধকরণ এবং রাশিয়ান তেলের দামের সর্বোচ্চ সীমা কমিয়ে আনা।

এই পদক্ষেপের প্রশংসা করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি একে “অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী” বলে অভিহিত করেছেন। ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য আশা করছে, এই অর্থনৈতিক চাপ রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে বাধ্য করবে।

তবে রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ জানিয়েছেন, রুশ অর্থনীতি এই নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা করতে সক্ষম এবং ইউক্রেনে রুশ হামলা আরও জোরালো হবে।

যুক্তরাজ্যের ফরেন অফিস জানিয়েছে, তাদের নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত ইউনিট ২৬১৬৫ মারিউপোল শহরে হামলায় জড়িত ছিল। ওই হামলায় ইউক্রেনের একটি থিয়েটারে শতাধিক সাধারণ নাগরিক নিহত হয়।

আরও জানা যায়, এই গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের একজন ইউলিয়া স্ক্রিপালের ফোনে স্পাইওয়্যার স্থাপন করেছিলেন, যিনি ২০১৮ সালে সলসবেরিতে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হন।

যুক্তরাজ্য বলছে, রাশিয়া ব্রিটিশ মিডিয়া, টেলিকম, জ্বালানি এবং রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ চালিয়েছে। “ক্রেমলিনকে স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, আমরা তাদের ছায়া তৎপরতা দেখতে পাচ্ছি এবং তা মেনে নেওয়া হবে না,” বলেন ল্যামি।

ইতোমধ্যে ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য রাশিয়ার অর্থনীতিকে ঘিরে ধরতে চাচ্ছে। ইউরোপীয় নেতারা আশা করছেন, যুক্তরাষ্ট্রও আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেবে। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়াকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ৫০ দিনের মধ্যে শান্তিচুক্তি না হলে কঠোর শুল্ক আরোপ করা হবে।

এছাড়া, পশ্চিম আফ্রিকায় বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালানোর অভিযোগে “আফ্রিকান ইনিশিয়েটিভ” নামক একটি সামাজিক প্রচারণার তিন নেতার বিরুদ্ধেও যুক্তরাজ্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এই প্রচারণা রাশিয়ান অর্থায়নে পরিচালিত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

রাশিয়া অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং দাবি করেছে, তারা কোনো দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করেনি বা তাদের অর্থনীতি ধ্বংস করতে চায় না।

RELATED NEWS

Latest News