যুক্তরাজ্যের এমপি ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাতিজি টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ এনে আইনি নোটিশ দিয়েছেন।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকার পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে তদন্ত চলছে, তা “মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত”। এসবের যথাযথ জবাব না এলে ৩০ জুনের পর বিষয়টি তিনি চূড়ান্তভাবে বন্ধ বলেই বিবেচনা করবেন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ সোমবার এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে জানানো হয়, এই আইনি নোটিশ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বরাবর পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, চলতি মাসে যুক্তরাজ্য সফরের সময় টিউলিপ সিদ্দিক প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের অনুরোধ করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল ভুল বোঝাবুঝি দূর করা। কিন্তু ওই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়।
টিউলিপের দাবি, স্কাই নিউজকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে প্রফেসর ইউনূস যেসব মন্তব্য করেছেন, তাতে তার প্রতি নিরপেক্ষ তদন্তের অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে এবং তদন্ত কার্যক্রমটি বাতিল করা উচিত।
গত মার্চে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেন, “টিউলিপ এখানে প্রচুর সম্পদ রেখে গেছেন এবং তাকে দায় নিতে হবে।”
আইনি নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, “গণমাধ্যমে একতরফা ব্রিফিং, আমাদের পাঠানো চিঠির জবাব না দেওয়া এবং যুক্তরাজ্য সফরের সময় টিউলিপের সঙ্গে দেখা না করার সিদ্ধান্ত যথাযথ ও ন্যায়সংগত তদন্তের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।”
স্কাই নিউজ জানায়, এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও দুদকের মন্তব্য জানার চেষ্টা করা হলেও তারা এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ আগে দাবি করেছে, টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে এবং তারা দেশের আদালতের মাধ্যমেই এর নিষ্পত্তি করবে।
টিউলিপ সিদ্দিক স্কাই নিউজকে বলেন, “তারা আমাকে তাদের কাদা রাজনীতিতে টেনে আনতে চায়। কিন্তু আমি জনগণের জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে আমার কাজ চালিয়ে যাব। তারা যে রাজনৈতিক প্রতিশোধ নিচ্ছে তা এখন বন্ধ হওয়া দরকার।”
উল্লেখ্য, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হন, যখন বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন।
তৎকালীন সময় থেকেই তিনি দুর্নীতি দূর ও অবৈধভাবে বিদেশে স্থানান্তরিত অর্থ উদ্ধার করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাজ শুরু করেন। এখন পর্যন্ত দেশে স্থায়ী সরকার গঠনের জন্য ভোট আয়োজনের আগে তিনি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।