ঢাকা, ২৮ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় আবারও ট্রাম্প প্রশাসনের টার্গেটে পড়েছে। তবে এবার শুধু মতাদর্শ নয়, সরাসরি আর্থিক আঘাত হানার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে হার্ভার্ডের সঙ্গে থাকা সব ফেডারেল চুক্তি বাতিল করার, যার আর্থিক পরিমাণ প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার।
সোমবার দুইজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। জানা গেছে, জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (GSA) অন্যান্য সরকারি সংস্থাগুলোকে চিঠি পাঠিয়ে বলছে, হার্ভার্ডের সঙ্গে যেসব চুক্তি রয়েছে তা খতিয়ে দেখে বিকল্প ভেন্ডরের মাধ্যমে নতুন করে বরাদ্দ দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে।
এই পদক্ষেপটি আসে এমন সময়ে, যখন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কিছুদিন আগেই ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। ওই মামলাটি করা হয়েছিল ২.২ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল অনুদান ও চুক্তি হঠাৎ করে স্থগিত করাকে কেন্দ্র করে। এরপর আরও ৪৫০ মিলিয়ন ডলার বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং হার্ভার্ডকে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি থেকেও সাময়িকভাবে বিরত রাখে সরকার।
বর্তমানে এই সিদ্ধান্ত একটি ফেডারেল আদালতের আদেশে স্থগিত রয়েছে এবং পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারিত হয়েছে মঙ্গলবার।
হার্ভার্ড দাবি করেছে, এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার স্বাধীনতার ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ও ফেডারেল আইনের লঙ্ঘন। বিশ্ববিদ্যালয়টির ভাষায়, এ ধরনের সিদ্ধান্ত শুধু হার্ভার্ড নয়, বরং গোটা উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
প্রসঙ্গত, হার্ভার্ডে বর্তমানে প্রায় ৬,৮০০ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত, যা তাদের মোট শিক্ষার্থীর ২৭ শতাংশ। এই সিদ্ধান্ত তাদের ওপর তীব্র প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন:
ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই হার্ভার্ডের ট্যাক্স ছাড় সুবিধা বাতিল, এনডাওমেন্ট ফান্ডে অতিরিক্ত কর আরোপ এবং নাগরিক অধিকার সংক্রান্ত তদন্তের হুমকি দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার পরিসরে এক নতুন চাপ তৈরি করতে পারে এবং ভবিষ্যতে অন্যান্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্যও নজির স্থাপন করবে।
হার্ভার্ডের এই আইনি লড়াই কেবল অর্থনীতিক প্রভাব নয়, বরং শিক্ষার স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নিয়ে এক বড় বিতর্কের সূচনা করেছে।