Sunday, June 22, 2025
Homeআন্তর্জাতিকআফগান নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, ক্ষোভে ফুঁসছে মানবিক সংগঠনগুলো

আফগান নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, ক্ষোভে ফুঁসছে মানবিক সংগঠনগুলো

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার এক নির্বাহী আদেশে আফগানিস্তানসহ এক ডজন দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।

এ নিষেধাজ্ঞায় আফগানিস্তানের নাগরিকদের সাধারণ ভ্রমণ বন্ধ হলেও যেসব আফগান যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধকালীন সহযোগী ছিলেন, তাদের জন্য বিশেষ অভিবাসী ভিসা (SIV) প্রক্রিয়া চালু থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

২০২১ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের পর থেকে প্রায় দুই লাখ আফগান নাগরিক ইতিমধ্যে এই ভিসার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসিত হয়েছেন। এর বাইরেও আরও দুই লাখের বেশি আবেদনকারী এখনও প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় আছেন।

এই তথ্য নিশ্চিত করেছে সরকারি সংস্থা এবং আফগান উদ্বাস্তুদের সহায়তায় নিয়োজিত বেসরকারি সংগঠন AfghanEvac।

ট্রাম্পের ঘোষণায় বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে বর্তমানে তালেবান সরকারের শাসন চলছে, যেটি একটি আন্তর্জাতিকভাবে চিহ্নিত সন্ত্রাসী সংগঠন। এই প্রশাসন যথাযথ পাসপোর্ট কিংবা নাগরিক নথিপত্র যাচাইয়ের সক্ষমতা রাখে না। এ ছাড়া, ভিসা জালিয়াতি এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসাধারীদের অনুপ্রবেশের আশঙ্কাও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলেও উল্লেখ করা হয়।

প্রেসিডেন্টের আদেশে আরও বলা হয়েছে, আফগানিস্তান বর্তমানে এমন এক রাষ্ট্র যেখানে কার্যকর কেন্দ্রীয় প্রশাসন নেই। ফলে দেশটির নাগরিকদের নিরাপদ যাচাই কার্যকর নয়।

তবে মানবিক সংগঠন AfghanEvac-এর প্রধান এবং সাবেক নৌবাহিনী সদস্য শন ভ্যানডাইভার এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, “এই নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের নিরাপদ রাখবে না। এটি বরং যুদ্ধকালীন মিত্র, শিক্ষার্থী, মানবিক আশ্রয়প্রার্থী এবং পরিবারগুলোর জন্য আরেক দফা বিশ্বাসঘাতকতা।”

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা আফগান নাগরিকদের জন্য অস্থায়ী সুরক্ষা স্ট্যাটাস (TPS) নামক একটি বিশেষ প্রোগ্রাম মে মাসে বাতিল করা হয়েছে এবং আগামী ১৪ জুলাই এই প্রোগ্রাম সম্পূর্ণভাবে শেষ হতে যাচ্ছে।

মার্কিন স্বরাষ্ট্র সচিব ক্রিস্টি নোম বলেন, “আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এ দেশে তাদের অবস্থানের প্রয়োজনীয়তা নাকচ করে।”

এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অভিবাসন আইনজীবী ও অধিকারকর্মীরা। অনেকেই মনে করছেন, যেসব আফগান নাগরিক মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে কাজ করেছেন, তাদের জীবন এখন মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে।

নির্বাচনী বছর সামনে রেখে ট্রাম্প প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত অভিবাসন নীতিতে আরও কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তবে মানবিক গোষ্ঠীগুলো বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে এইসব যুদ্ধকালীন সহযোগীদের নিরাপদে আশ্রয় দেওয়ার, কারণ তারা মার্কিন সেনাদের জীবনের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করেছেন।

বর্তমানে, যারা বিশেষ অভিবাসী ভিসা প্রক্রিয়ায় রয়েছেন, তাদের ভাগ্য নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপ ও আদালতের হস্তক্ষেপের ওপর।

RELATED NEWS

Latest News