যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে নতুন অস্ত্র সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন এবং একইসঙ্গে হুমকি দিয়েছেন যে, রাশিয়া যদি আগামী ৫০ দিনের মধ্যে শান্তিচুক্তিতে না আসে, তাহলে রাশিয়ান রপ্তানি পণ্যের ক্রেতাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
ওভাল অফিসে ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প জানান, “আমি পুতিনের আচরণে হতাশ। তাই আমরা ইউক্রেনকে বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র সহায়তা দেব, যার মধ্যে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে।”
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্যে মূলত সেইসব তৃতীয় পক্ষ বা দেশগুলোকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যারা এখনো রাশিয়া থেকে তেল, গ্যাস বা অন্যান্য পণ্য আমদানি করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার অর্থনীতির ওপর অনেক বেশি চাপ সৃষ্টি করতে পারে। কারণ পূর্ববর্তী নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়া চীন ও ভারতের মতো দেশগুলোতে তেল বিক্রি চালিয়ে গেছে।
রাশিয়ার অর্থনীতি একদিকে যুদ্ধকালীন ব্যয়ের কারণে গত দুই বছরে প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেও (২০২৩ সালে ৪.১% এবং ২০২৪ সালে ৪.৩%), অন্যদিকে উচ্চ সুদের হার (বর্তমানে ২১%) এবং বিনিয়োগ সংকটের কারণে প্রবৃদ্ধি এখন অর্ধেকে নেমে আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও জার্মানির মিউনিখভিত্তিক আইএফও ইনস্টিটিউট ভবিষ্যদ্বাণী করছে, ২০২৫ সালেই রাশিয়ার প্রবৃদ্ধি ১% এর নিচে নেমে যেতে পারে এবং ২০২৬ সালে অর্থনীতি সংকুচিতও হতে পারে।
চীনের সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্রমশ ঘনীভূত হয়েছে। ২০২৪ সালে চীনের সঙ্গে রাশিয়ার আমদানি ৪০% এবং রপ্তানি ৩০% ছাড়িয়ে যায়। বিশেষ করে সামরিক সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে চীন এবং হংকং ছিল অন্যতম পথ।
রাশিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক ভাসিলি অ্যাস্ট্রভ জানান, “ট্রাম্পের শুরুতে রাশিয়ার প্রতি নমনীয় মনোভাব রুশ আর্থিক বাজারে আশাবাদ জাগিয়েছিল। রুবল ও স্টক মার্কেট প্রবল উত্থান দেখায়।”
তবে নভেম্বরে গ্যাজপ্রমব্যাংকের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর রুবলের দাম ২৫% কমে যায় এবং শেয়ারবাজারও পড়ে যায়।