Tuesday, October 14, 2025
Homeআন্তর্জাতিকগাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণায় ট্রাম্পের উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক সমঝোতা

গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণায় ট্রাম্পের উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক সমঝোতা

ইসরায়েল-হামাস বন্দি বিনিময়ের পর যুক্তরাষ্ট্রসহ চার দেশের স্বাক্ষরে শান্তি চুক্তি

গাজায় দীর্ঘ দুই বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর অবশেষে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এসেছে। সোমবার ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে বন্দি বিনিময়ের কয়েক ঘণ্টা পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ মধ্যপ্রাচ্যের নেতারা একটি ঘোষণায় স্বাক্ষর করেন, যা সংঘাতের আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটাতে পারে।

ইসরায়েল সফর শেষে ট্রাম্প মিশরের শারম আল শেখে আয়োজিত গাজা সম্মেলনে অংশ নেন। সেখানে মিশর, কাতার ও তুরস্কের নেতাদের সঙ্গে এক যৌথ ঘোষণায় তিনি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির মাধ্যমে চার দেশই গাজা যুদ্ধবিরতির গ্যারান্টর হিসেবে ভূমিকা নেবে।

স্বাক্ষরের আগে ট্রাম্প বলেন, “আজ মধ্যপ্রাচ্যের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন। এই চুক্তি স্থায়ী শান্তির ভিত্তি তৈরি করবে।”

চুক্তির অংশ হিসেবে সোমবার হামাস মুক্তি দিয়েছে তাদের হাতে থাকা শেষ ২০ জন জীবিত বন্দিকে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল ছেড়ে দিয়েছে প্রায় ১ হাজার ৯৬৮ জন বন্দিকে, যাদের অধিকাংশই ফিলিস্তিনি।

ইসরায়েলি পার্লামেন্টে ভাষণ দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, “অক্টোবর ৭ থেকে আজ পর্যন্ত ইসরায়েল এক কঠিন সময় পার করেছে। এখন শান্তির নতুন সূচনা।”

টেল আবিবে শত শত মানুষ বন্দি পরিবারের সমর্থনে জমায়েত হয়েছিলেন। মুক্তির খবর পৌঁছাতেই আনন্দ, কান্না আর গানে ভরে যায় চত্বরটি। অন্যদিকে পশ্চিম তীরের রামাল্লায় মুক্ত বন্দিদের স্বাগত জানাতে ভিড় জমে যায় রাস্তায়। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসেও একই দৃশ্য দেখা যায়।

হামাস জানিয়েছে, তারা ২৭ জন নিহত বন্দির মরদেহও ফেরত দেবে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে, ইতিমধ্যে দুই বন্দির মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

তবে এখনো বড় চ্যালেঞ্জ হলো স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা। হামাসের নিরস্ত্রীকরণ ও ইসরায়েলের পূর্ণ প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা বাকি আছে। ট্রাম্প বলেছেন, “দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু হয়ে গেছে, সব পক্ষ আলোচনায় আছে।”

মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি ট্রাম্পের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, “এই অঞ্চলে শান্তি আনতে তিনিই সক্ষম।”

গাজা যুদ্ধবিরতিতে বিশ্বজুড়ে স্বস্তি ফিরেছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু।

ট্রাম্পের উদ্যোগে স্বাক্ষরিত এই সমঝোতা মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিনের অস্থিরতা কমাতে নতুন অধ্যায় খুলে দিতে পারে।

RELATED NEWS

Latest News