যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের “ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল” পাস হওয়ার পর অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ সংস্থা (আইসিই) এবং ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) বাজেটে বড় পরিবর্তন আসছে। এর মধ্যেই অনলাইনে দাবি উঠেছে যে এই দুই সংস্থার সম্মিলিত বাজেট রাশিয়ার সামরিক বাজেটকে ছাড়িয়ে গেছে। তবে যাচাই করে দেখা যাচ্ছে, এই তথ্য বিভ্রান্তিকর।
অ্যাক্সিওসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন বিল অনুযায়ী আইসিইর বাজেট ২০২৫ অর্থবছরের জন্য তিনগুণ বাড়ানো হচ্ছে। এখনকার ৯.৩ বিলিয়ন ডলারের বাজেট বাড়িয়ে পাঁচ বছরে মোট ১০০ থেকে ১৫০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়া হবে। অর্থাৎ, বছরে গড়ে আইসিইর বাজেট দাঁড়াবে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে, রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, এফবিআইর বাজেট ২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রায় ৫৪৫ মিলিয়ন ডলার কমিয়ে ১০.৬ বিলিয়ন থেকে ১০.১ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হচ্ছে।
ফলে, দুই সংস্থার সম্মিলিত বার্ষিক বাজেট হবে আনুমানিক ৪০ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে, স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (SIPRI) এপ্রিল ২০২৫ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া আগামী অর্থবছরে সামরিক খাতে ১৫.৫ ট্রিলিয়ন রুবেল খরচ করার পরিকল্পনা করেছে। বর্তমান রুবেলের মান অনুসারে এটি প্রায় ১৭৪.১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এই তথ্য থেকে স্পষ্ট, যুক্তরাষ্ট্রে আইসিই ও এফবিআইর সম্মিলিত বাজেট রাশিয়ার বার্ষিক সামরিক ব্যয়ের তুলনায় অনেক কম।
তবে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছে এভাবে যে, যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ বছরে এই দুই সংস্থার জন্য বরাদ্দ ১৮০ বিলিয়ন ডলারকে রাশিয়ার এক বছরের সামরিক বাজেটের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। অথচ এটা দুই ভিন্ন সময় ও ধরনের ব্যয়ের তুলনা, যা সঠিক পর্যালোচনার জন্য উপযুক্ত নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা দপ্তরের সহকারী সচিব ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন বলেছেন, “এই বাজেট বৃদ্ধি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করবে।”
তবে, সমালোচকরা বলছেন, অভিবাসন নীতি আরও কঠোর করার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থার ব্যয় কমানো নতুন রাজনৈতিক ভারসাম্য তৈরি করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বিভ্রান্তিকর বাজেট তুলনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার হতে পারে। তাই বাজেট বিশ্লেষণে সময়কাল, খাত ও উদ্দেশ্য বিবেচনায় নেওয়া জরুরি।