বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলমান বাণিজ্য বন্ধ হবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা এস কে বশির উদ্দিন। তিনি বলেন, ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থে উভয় দেশ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করবে।
শনিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “ভারতের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য আমাদের কাছে আসেনি। আনুষ্ঠানিকভাবে তথ্য পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোনো সমস্যা দেখা দিলে উভয় দেশ আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধানের চেষ্টা করবে। আমরা বিশ্বাস করি, দুই দেশের জনগণের স্বার্থেই বাণিজ্য অব্যাহত থাকবে।”
সীমান্ত বন্দর নিয়ে ভারতের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, “আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু সংবাদ সূত্রে জানতে পেরেছি যে আখাউড়া ও ডাউকি সীমান্তসহ কিছু স্থানে ভারতের পক্ষ থেকে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের রপ্তানিকে প্রভাবিত করতে পারে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সব পণ্য আমাদের দেশ থেকে রপ্তানি হয় না। বড় একটি অংশ গার্মেন্টস পণ্য। আমাদের লক্ষ্যই প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা অর্জন। ভারতও একটি শক্তিশালী টেক্সটাইল শিল্পের দেশ, কিন্তু আমাদের সক্ষমতার ভিত্তিতেই এসব পণ্য রপ্তানি হয়।”
ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট ও রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তিনি বলেন, “এই বিষয়ে এখনো আমাদের তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। আমাদের নিজস্ব সক্ষমতায় বিষয়টি মোকাবিলা করেছি।”
এই সিদ্ধান্তে ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অবশ্যই। এটি প্রতিযোগিতার বিষয়। পরিবহন ব্যয়সহ অনেক বিষয় জড়িত। কখনো আমরা কৃষি পণ্যে নিষেধাজ্ঞা দিই, কখনো ভারত দেয়। এটি বাণিজ্য ব্যবস্থাপনার অংশ।”
ভারতের সঙ্গে আলোচনা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী সবকিছু করব। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু পাইনি।”
দুই দেশের বর্তমান সম্পর্কের প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত এসেছে কিনা, জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “আমার কাজ বাণিজ্য নিয়ে, আমি সেটাতেই মনোযোগী থাকতে চাই। আমি সবসময় উন্মুক্ত বাণিজ্যে বিশ্বাস করি। আমাদের ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের সক্ষমতা বাড়াতে এর কোনো বিকল্প নেই।”
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কীভাবে কমানো হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। তা একদিনে সম্ভব না। পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে আমরা যেসব পণ্য নেই, ভারতও তা করে। এটা প্রাকৃতিক বাস্তবতায় নির্ভর করে। আমরা বাণিজ্য বহুমুখীকরণ ও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তা সমাধানের চেষ্টা করছি।”
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারতের পক্ষ থেকে আখাউড়া ও ডাউকি সীমান্তে কিছু বিধিনিষেধ আরোপের খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে। তবে এ বিষয়ে এখনো বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো চিঠি পায়নি।