ট্রাইবেকা ফেস্টিভালে আলোড়ন তুলেছে বাস্তব জীবনের ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত নতুন চলচ্চিত্র টো। গৃহহীন নারী আমান্ডা ওগলের এক বছরের দীর্ঘ সাহসী আইনি লড়াইকে কেন্দ্র করে তৈরি এই ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন রোজ বাইর্ন।
২০১৭ সালের অক্টোবরে আমান্ডার একমাত্র সম্বল, একটি পুরনো টয়োটা ক্যামরি গাড়ি চুরি হয়ে যাওয়ার পর শুরু হয় তার সংগ্রামের নতুন অধ্যায়। পুলিশ গাড়িটি উদ্ধার করলেও একটি টো কোম্পানি সেটি জব্দ করে রাখে এবং ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ৪২৭ ডলার দাবি করে। আর্থিক সংকটে থাকা আমান্ডার পক্ষে এই অর্থ জোগাড় করা অসম্ভব ছিল। এভাবেই শুরু হয় এক দীর্ঘ আইনি লড়াই, যা গড়ায় প্রায় ৩৭০ দিনের মামলা পর্যন্ত।
ছবির পরিচালক স্টেফানি লেইং এবং চিত্রনাট্যকার জোনাথন কিসি ও ব্রান্ট নোভিন অত্যন্ত মানবিকভাবে এই কাহিনি চিত্রায়িত করেছেন। ছবিতে শুধু আইনি প্রক্রিয়াই নয়, আমান্ডার প্রতিদিনের টিকে থাকার সংগ্রাম, আত্মসম্মানের লড়াই এবং মায়ের সঙ্গে সম্পর্কের জটিলতাও সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
রোজ বাইর্ন আমান্ডার চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেছেন। গৃহহীন অবস্থায়ও তার দৃঢ়চেতা মনোভাব এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মানসিকতা দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন অক্টাভিয়া স্পেন্সার, অ্যারিয়ানা ডেবোস, ডেমি লোভাটো, ডমিনিক সেসা এবং সাইমন রেক্স।
ছবিতে আমান্ডার আইনজীবী কেভিন এগার্সের চরিত্রে ডমিনিক সেসার দুর্দান্ত অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে। অন্যদিকে, টো কোম্পানির আইনজীবী মার্টিন লা রোসার চরিত্রে করবিন বার্নসেন খলনায়ক চরিত্রে চমৎকার অভিনয় করেছেন।
ছবির শেষদিকে প্রকৃত আমান্ডা ওগলের ও তার কন্যার বাস্তব ফুটেজও দেখানো হয়েছে, যা দর্শকদের আবেগ ছুঁয়ে যায়। টো চলচ্চিত্রটি কেবল একটি গাড়ি ফেরত পাওয়ার গল্প নয়, বরং এটি সামাজিক অবিচার এবং গৃহহীন মানুষদের প্রতি ব্যবস্থার অমানবিক দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে এক তীব্র প্রতিবাদ।
ছবিটির সময়কাল ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। বর্তমানে এর পরিবেশনার জন্য উপযুক্ত পরিবেশক খোঁজা হচ্ছে।
টো এমন একটি গল্প, যা দর্শকদের হৃদয়ে অনুপ্রেরণা জাগায়। এ ধরনের ছোট অথচ গভীর মানবিক গল্প আমাদের সময়ে আরও বেশি প্রয়োজন। ট্রাইবেকা ফেস্টিভালে এর উষ্ণ গ্রহণ প্রমাণ করে, মানুষের প্রতি সহানুভূতি এবং ন্যায়বোধের গল্প আজও দর্শকদের আকর্ষণ করে।