ইরান ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে প্রতিদিন হাজার হাজার আফগান নাগরিক ইরান ত্যাগ করে আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশে প্রবেশ করছেন। জোরপূর্বক বিতাড়নের হুমকি এবং যুদ্ধজনিত নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে এই গণপ্রত্যাবর্তন ঘটছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ও তালেবান কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ব ভিশন ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে জানায়, ইসলাম কালা সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৫,০০০ আফগান দেশে ফিরছেন। ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫ লাখ মানুষকে ইরান থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাদের অনেকেই দুর্বল, আতঙ্কিত এবং চরম মানবিক চাহিদার মধ্যে রয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে সংস্থাটির যোগাযোগ ও অ্যাডভোকেসি পরিচালক মার্ক ক্যালডার বলেন, “এই মানুষগুলোকে খাবার, আশ্রয়, প্রয়োজনীয় সামগ্রী এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের সহায়তা প্রয়োজন। কিন্তু তারা এমন একটি দেশে ফিরছেন যেখানে মৌলিক সেবা ব্যবস্থাই ভেঙে পড়েছে।”
ইরানে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয় অক্টোবর ২০২৩ থেকে। একই সময় পাকিস্তানেও undocumented আফগানদের বিতাড়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে ইরানজুড়ে জনসাধারণের ঐক্য
আফগানিস্তানের দীর্ঘমেয়াদি সংঘাত ও আন্তর্জাতিক সহায়তা হ্রাসের কারণে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও খাদ্য সহায়তাসহ বিভিন্ন খাতে সেবা সীমিত হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ২০২৫ সালের আফগানিস্তান মানবিক চাহিদা ও সাড়া পরিকল্পনার মাত্র ১৮ শতাংশ অর্থায়ন এখন পর্যন্ত এসেছে। এতে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী, শিশু, শরণার্থী ও গৃহহীনরা চরম সঙ্কটে পড়েছেন।
হেরাতের শরণার্থী তথ্য ও জনসংযোগ কমিটির প্রধান আহমাদুল্লাহ মুত্তাকি জানান, জুনের ১৩ তারিখের আগে প্রতিদিন গড়ে ৩,৫০০ থেকে ৪,০০০ আফগান নাগরিক হেরাতে প্রবেশ করতেন। এখন সেই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। তিনি বলেন, “আগে বৈধ পাসপোর্টধারী ৮০০ থেকে ১,০০০ জন আসতেন প্রতিদিন। এখন আসছেন প্রায় ৪,০০০।”
বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলছেন, আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানো না হলে আফগানিস্তানের মানবিক বিপর্যয় আরও গভীর হতে পারে।