জাতীয় টেলিভিশন ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস ঘোষণা করেছেন যে তিনি শিগগিরই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠিয়ে ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে আয়োজনের প্রস্তাব দেবেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৮টা ২০ মিনিটে প্রচারিত জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের ভাষণে তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে আমি শিগগিরই প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠাব। আমাদের অনুরোধ থাকবে আগামী রমজানের আগেই, বিশেষ করে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে, জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এখন আমাদের চূড়ান্ত দায়িত্ব পালন করার সময় এসেছে—নির্বাচন আয়োজন। আজ আমি যখন আপনাদের সামনে কথা বলছি, আমরা আমাদের যাত্রার শেষ ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে প্রবেশ করছি। এখন আমরা একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করব।”
তিনি আশা প্রকাশ করেন, সুষ্ঠু ও সফল নির্বাচন আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ “নতুন বাংলাদেশ” গড়ার পথে অগ্রসর হতে পারবে। তিনি বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে আমরা সব ধরনের সহায়তা ও সহযোগিতা দেব, যাতে এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়।”
প্রফেসর ইউনুস জানান, এ নির্বাচনে প্রবাসী ভোটারদের অংশগ্রহণের জন্যও প্রথমবারের মতো বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “যখন আমরা ভোট দেব, তখন যেন চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেই সাহসী মানুষের মুখ, যারা রক্ত দিয়ে এই মূল্যবান অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে।”
ভাষণে দেশের অর্থনীতি নিয়েও কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ১৪ শতাংশে পৌঁছেছিল, যা এখন অর্ধেকে নেমেছে। আমরা আশা করছি ডিসেম্বর নাগাদ এটি ৬ শতাংশে নেমে আসবে।”
তিনি উল্লেখ করেন, চলতি অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে ৩.৩৩ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছে। রপ্তানি আয় প্রায় ৯ শতাংশ বেড়েছে এবং বৈদেশিক বিনিয়োগও দ্বিগুণ হয়েছে। এতে টাকার মান শক্তিশালী হয়েছে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বাড়ছে।
প্রফেসর ইউনুস বলেন, “অক্টোবর থেকে ছয় মাসে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যা পূর্ববর্তী সরকারের শেষ ছয় মাসের দ্বিগুণ।”