বিহার, ২৬ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : ভারতের বিহার রাজনীতিতে এক নতুন নাটকীয় মোড় দেখা গেছে। রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) প্রধান লালু প্রসাদ যাদব তার বড় ছেলে তেজ প্রতাপ যাদবকে দল থেকে ছয় বছরের জন্য বহিষ্কার করেছেন। পারিবারিক ও রাজনৈতিক মূল্যবোধ লঙ্ঘনের অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি তেজ প্রতাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা প্রকাশ করেন। তিনি অনুষ্কা যাদব নামের এক তরুণীর সঙ্গে নিজের ছবি পোস্ট করেন। পরে তা এডিট করে বলেন, তার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল। যদিও ততক্ষণে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়ে যায়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে লালু প্রসাদ জানান, “তেজ প্রতাপের আচরণ আমাদের পারিবারিক আদর্শ ও দলের শৃঙ্খলার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তাই আমি তাকে দল ও পরিবার দুই জায়গা থেকেই আলাদা করছি।”
বহিষ্কারের পর তেজ প্রতাপ এক আবেগঘন প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “আমি সবসময় পরিবার ও দলের সম্মান রেখেছি। যদি আমার ব্যক্তিগত কোনো সিদ্ধান্তে কারও কষ্ট হয়ে থাকে, আমি ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু আমার সম্পর্ক একান্তই ব্যক্তিগত। এতে রাজনীতি টানা ঠিক নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমি এখনো বাবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে সত্য সবার সামনে আসবে। আমি কোনো চাপের কাছে মাথা নত করব না।”
তেজ প্রতাপের এই অবস্থান রাজনীতির মাঠে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, ব্যক্তিগত জীবন ও রাজনৈতিক আদর্শের সংঘর্ষ বিহারের রাজনীতিতে আগেও দেখা গেছে, তবে পারিবারিক এমন কঠোর সিদ্ধান্ত বিরল।
আরজেডির অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষা নীতিমালার আওতায়ই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের ঘনিষ্ঠ সূত্র। যদিও এ বিষয়ে দলীয়ভাবে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি এখনো দেওয়া হয়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তেজ প্রতাপের এই বহিষ্কার ভবিষ্যতে আরজেডির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে যুবসমর্থকদের মধ্যে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে তীব্র আলোচনা চলছে। কেউ বলছেন, ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে, কেউ আবার বলছেন, রাজনীতিকদের কাছে পারিবারিক মূল্যবোধ অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত।
এখন দেখার বিষয়, তেজ প্রতাপ নিজে নতুন কোনো রাজনৈতিক অবস্থান নেন কি না, কিংবা দলের ভেতরে এই বিষয়ে আরও কোনো প্রতিক্রিয়া আসে কি না।