তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান শনিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছেন বলে প্রাথমিক ফলাফলে জানা গেছে। তবে নির্বাচনের পর থেকেই দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভে শতাধিক মানুষের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ফলাফলে দেখা গেছে, হাসান প্রতিটি আসনে ৯৫ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছেন। চূড়ান্ত ফলাফল কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ঘোষণা হওয়ার কথা রয়েছে। টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবারই তার শপথ গ্রহণের আয়োজন করা হবে।
প্রধান বিরোধী দল চাদেমা দাবি করেছে, নির্বাচনের দিন বুধবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে শত শত মানুষ নিহত হয়েছে। দলটির মুখপাত্র এএফপিকে বলেন, হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০০ জন নিহত।
রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সহিংসতা অস্বীকার করেছে সরকার। তারা বলছে, “অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের” অভিযোগ সত্য নয়। তবে দেশজুড়ে কারফিউ, লকডাউন ও ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় সঠিক তথ্য পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
বুধবারের পর থেকে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো হালনাগাদ খবর দিতে পারছে না, এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস তানজানিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জাতিসংঘের মুখপাত্রের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বিক্ষোভে হতাহতের ঘটনাগুলো উদ্বেগজনক।”
দার এস সালামে এক নিরাপত্তা সূত্র ও এক কূটনীতিক এএফপিকে জানিয়েছেন, নিহতের সংখ্যা “শতাধিক”, এবং শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল।
এদিকে, সরকার চাদেমা দলের নেতাকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় অভিযুক্ত করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রেখেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, নির্বাচনের আগে দেশজুড়ে “ভয় ও সন্ত্রাসের ঢেউ” তৈরি হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল একাধিক অপহরণ ও নিখোঁজের ঘটনা।
বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানের নেতৃত্বে প্রেসিডেন্ট হাসানের ছেলে আবদুল হালিম হাফিজ আমিরের নাম উঠে এসেছে, যা জনগণের ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে।
২০২১ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ক্ষমতায় আসা হাসান শুরু থেকেই সেনাবাহিনীর একটি অংশ ও মাগুফুলির ঘনিষ্ঠদের বিরোধিতার মুখে পড়েছিলেন।
তবে সেনাপ্রধান জ্যাকব মকুন্ডা বৃহস্পতিবার হাসানের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভকারীদের “অপরাধী” হিসেবে আখ্যা দেন।
তানজানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ থাবিত কম্বো শুক্রবার আল জাজিরাকে বলেন, “এখন পর্যন্ত কোনো নিহতের সরকারি সংখ্যা নেই। কোনো অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করা হয়নি।”
